যুবরাজের ব্যাটে চড়ে চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু হায়দরাবাদের

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাদের নতুন আসর শুরু করলো চ্যাম্পিয়নের মতোই। গত আসরের ফাইনালে যাদেরকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলো তারা, এবার সেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সে বেঙ্গালুরুকে হারিয়েই শুরু হলো হায়দরাবাদের আইপিএল।

বুধবার রাতে রাজিব গান্ধি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দশম আইপিএলের প্রথম ম্যাচে নিজের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরিটা তুলে নেন যুবরাজ সিং। মাত্র ২৩ বলে ৫০ করেন তিনি। তার ইনিংসটি শেষ হয় ২৭ বলে ৬২ রান করে। যুবরাজের দারুণ এই ইনিংসটিতে ভর করে ২০০-এর উপরে স্কোর হয় হায়দরাবাদের। যা প্রথম ইনিংস শেষেই সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে যায় চ্যাম্পিয়নদের।

এরপর আফগান স্পিনার, আইপিএলে অভিষিক্ত রশিদ খান, আশিস নেহরা ও ভুবনেশ্বর কুমার বেঙ্গালুরুর ছয় উইকেট সমানভাবে ভাগ করে নেন। ইনজুরির কারণে সেরা একাদশ নামাতে না পারা বেঙ্গালুরুর ৩৫ রানের হারটা নিশ্চিত হয়ে যায় তাতেই। ২০১১ সালের পর এই প্রথমবার আইপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচ হারলো বেঙ্গালুরু। পক্ষান্তরে ২০১৩ সালে আইপিএল খেলতে শুরু করা সানরাইজার্স এই প্রথম নিজেদের শুরুর ম্যাচে জিততে পারলো!

এই ম্যাচে দুই দলের মধ্যে মূল পার্থক্যটা গড়ে দেন মূলত যুবরাজ সিং। শেট ওয়ানসন প্রথমবারের মতো বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ফিফটি না করেই ফেরেন এই ম্যাচে। এর আগে হায়দরাবাদের হয়ে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে সাতটা ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সাতটিতেই ৫০-এর উপরের রান করেছেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক।

আট বলে ১৪ রান করে ওয়াটসনের আউটের পর হায়দরাবাদের ইনিংস গড়েন শেখর ধাওয়ান, মইসেস হ্যানরিক ও যুবরাজ সিং। এই তিনজনের মধ্যে যুবরাজের ব্যাটটি ছিলো তলোয়ারের মতো। ক্রিজে এসেই একের পর এক শট খেলতে থাকেন তিনি। তার তুলনায় অনেক ধীর গতির ব্যাটিং করেছেন ৩১ বলে ৪০ করা শেখর ধাওয়ান ও ৩৭ বলে ৫২ করা হ্যানরিক।

২০৭ রানের স্কোর সামনে পেয়েও চেজিংয়ের শুরুটা ভালোই করেছিলো বেঙ্গালুরু। ক্রিস গেইল ও মনদিপ সিংয়ের নতুন ওপেনিং জুটিতেই ফিফটি করে ফেলেছিলো তারা। পরে ট্রাভিস হেড ও কেডার যাদবও ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু ২০৭ রান চেজ করার জন্য ইনিংসে যে গতির দরকার ছিলো সেটা তাদের একবারও ছিলো না।

এ দিকে মোস্তাফিজুর রহমানের শূন্যতা পূরণে দলে নেয়া হয় আফগানিস্তানের স্পিনার রশিদ খানকে। তরুণ এই স্পিনার প্রথম আফগান হিসেবে খেলে ফেললেন আইপিএল এবং প্রথম ম্যাচে হতাশ করেননি। চার ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। তার তুলনায় বেশ খরুচে ছিলেন আশিস নেহরা। তার চার ওভারে বেঙ্গালুরু নিয়েছে ৪২ রান। দুটি উইকেটও অবশ্য নিয়েছেন তিনি। নেহরার তুলনায় ভুবনেশ্বর ছিলেন অসাধারণ। চার ওভারে তার খরচ ২৭ রান। তারও শিকার দুটি উইকেট। ব্যাটসম্যানদের বড় স্কোর এবং বোলারদের সুনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩৫ রানে জিতে যায় হায়দরাবাদ। দারুণভাবে শুরু হয় তাদের শিরোপা ধরে রাখার মিশন।

এই ম্যাচে বেঙ্গালুরুর হারের কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমে যেটি সামনে আসতে বাধ্য, তা হলো, তারকা খেলোয়াড়দর অনুপস্থিতি। বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং লোকেশ রাহুল; এই তিনজন ছাড়া বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইন আসলে ছিলো তাদের মূল ব্যাটিং লাইনের আবছা ছায়া।