১৯৯৯ সালের কথা ভুলেননি ওয়াকার

ঘটনা ১৬ বছর আগের। কিন্তু তা এতোটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে, তা ভুলেনি বাংলাদেশ। কারণ ওই বছর ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর মাধ্যমেই বদলে যায় এ দেশের ক্রিকেটের ভাগ্য। ক্রিকেট পরিণত এক জোয়ারে। ঘটনাটা ভুলেনি পাকিস্তানও। বিপরীত কারণেই তাদের মনে আছে ১৯৯৯ সালেরনর্দাম্পটনের কথা। ওই ম্যাচে পাকিস্তান দলের অন্যতম সদস্য ওয়াকার ইউনুস বাংলাদেশে এসেছেন দেশের কোচ হয়ে। বাংলাদেশ- পাকিস্তানের সিরিজ শুরুর আগে ওয়াকারের সামনে তোলা হয়েছিলো সেই জয়ের কথা। জবাবে তিনি বলেন, ‘সব কিছু স্পষ্টই মনে আছে আমার।’

১৬ বছর আগের সেই ক্ষতের কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘ওই ম্যাচের কথা আমার মনে আছে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে একটি ম্যাচই খেলেছিলাম আমি। সেই দিনটিতে বাংলাদেশই ছিলো সেরা দল। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই দারুণ খেলেছে তারা। তবে ওই বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিলাম আমরা। কিন্তু সেই দিনটি বাংলাদেশেরই ছিলো। তারপর থেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের সাফল্য অনেক।  এর মানে এটি নয় যে, আমরা আবারও তাদের বিপক্ষে সফল হবো, কারণ বাংলাদেশ দারুণভাবে উন্নতি করেছে, বিশ্বকাপে কয়েকটি দলকে হারিয়ে তারা নিজেদের উন্নতির প্রমাণও দিয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশকে আমরা হালকাভাবে নিচ্ছি না।’

বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা মানেই পাকিস্তানের জয়; এই ধারাটা এবার হয়তো ভাঙবে। সেই সম্ভাবনা জাগাচ্ছে পাকিস্তানের বর্তমান দলের অনভিজ্ঞতা। অনভিজ্ঞতার কথা ওয়াকার নিজেও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দল একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় এসেছে। এটি খুবই ভালো বিষয়। নতুন কাউকে দলে আসতে দেখা সব সময়ই দারুণ ব্যাপার। বিশ্বকাপ সাধারণত দলে পরিবর্তন নিয়ে আসে, আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের দলে বেশ কয়েকজন মেধাবী খেলোয়াড় এসেছে। বাংলাদেশও সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ উন্নতি করেছে। তারা এখন বেশ গোছালো একটি দল। আমি সিরিজের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছি।’

দলে তরুণ সদস্য বেশি থাকলেও সাঈদ আজমলের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছেন। যদিও আট মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বাইরে থাকা আজমল কতোটা কার্যকর হবেন, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। কিন্তু ওয়াকার মনে করেন আজমল আগের মতোই স্পিন বিষে নীল করে দিবেন প্রতিপক্ষকে। তিনি বলেন, ‘গত আট মাস সে কঠিন পরিশ্রম করেছে। আশা করি সে নিজের যোগ্যতা আবার দেখাবে। এ কারণেই তাকে তিন ফরম্যাটের সিরিজেই রাখা হয়েছে। অনুশীলন ম্যাচে সে দারুণ বোলিং করেছে। দীর্ঘ দিন পর সে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলেছে। এই মুহূর্তে তাকে বিচার করার যথেষ্ট সময় না। আশা করি, সে যে ধরনের ক্রিকেটার, তাতে সে দ্রুতই সেরা ফর্মে ফিরবে।’

নিজের দল নিয় আশাবাদী হলেও সিরিজে বাংলাদেশকেই ফেভারিট মানছেন ওয়াকার ইউনুস। তিনি বলেন, ‘সন্দেহ নেই, বাংলাদেশই ফেভারিট। আমরা একেবারেই তরুণ একটি দল নিয়ে এসেছি। তবে দুই একটা ম্যাচ খেলার পরই আমরা ভালো করতে পারবো। আমাদের কিছুরই অভাব নেই। অভিজ্ঞ যারা অবসর নিয়েছেন, তাদেরকে আমরা মিস করবো। তবে এখনো দলে বেশ কয়েকজন ম্যাচ উইনার আছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের তুলে ধরার জন্য তরুণদের দারুণ সুযোগ এই সিরিজ।’

অনুশীলন ম্যাচে হেরে যাওয়া মূল সিরিজে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন ওয়াকার। পাকিস্তানের কোচ বলেন, ‘ম্যাচটি কেবলই অনুশীলনের জন্য ছিলো। এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, ম্যাচটি আমরা তেমন সিরিয়াস ভাবে খেলিনি। তবে আমরা বিসিবি একাদশকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা বেশ ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছে। ম্যাচটিকে আমরা অনুশীলনের দারুণ সুযোগ হিসেবে নিয়েছিলাম। আশা করি প্রথম ওয়ানডেতেই আমরা ঘুরে দাঁড়াবো।’

আপনি আরো পড়তে পারেন

বোলারদের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক

নিজেদেরকে আবারও ফেভারিট বললেন সাকিব

হাফিজ: আমার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস