কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে আরও ৯ জন নিহত, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাতভর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বুধবার রাতের এ হামলায় কিয়েভে ৯ জন নিহত এবং ৭০ জনের মতো আহত হয়েছে। এ হামলার পর রাশিয়াকে শান্তির পথে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর রয়টার্সের।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর উদ্ধার অভিযান

যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের মধ্যেই কয়েকদিন ধরে হামলা ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। সর্বশেষ বুধবার রাতে কিয়েভ ও অন্যান্য অঞ্চলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীতে ছয় ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সতর্কতা জারি ছিল।

আজ বৃহস্পতিবার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিয়েভে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৯ জন নিহত ও ৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ছয়জন শিশু রয়েছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কিয়েভে বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন লেগেছে, একাধিক ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে এবং বাসিন্দাদের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা দেওয়া হয়েছে।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে রাজ্য জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, সবচেয়ে গুরুতর ঘটনাটি ঘটেছে কিয়েভ শহরের পশ্চিমে সভিয়াতোশিনস্কি জেলায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে। ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষের খোঁজ চলছে।

টেলিগ্রামে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, উদ্ধারকারী দলগুলো ফ্লাডলাইট নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে সাবধানে এগিয়ে যাচ্ছে।

জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, রাজধানীর ১৩টি স্থানে স্নাইফার কুকুর নিয়ে উদ্ধারকারী দল কাজ করছে। অন্তত চল্লিশটি স্থানে আগুন ধরে গেছে। গ্যারেজে আগুন লেগেছে, প্রশাসনিক ভবনে আগুন লেগেছে এবং ধাতব টুকরো যানবাহনে পড়ে গাড়িতেও আগুন লেগেছে।

এছাড়া ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভেরও রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের হামলা হয়েছে। খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, তার শহরটিতে ১৪ বার ড্রোন এবং ১০ বার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে।

তেরেখভ বলেন, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহুতল আবাসিক ভবন, একটি শহরের পলিক্লিনিক, একটি স্কুল ভবন, ব্যক্তিগত উঠোন, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং একটি হোটেল কমপ্লেক্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হওয়া যুদ্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এই হামলাগুলো ঘটছে, কারণ কিয়েভ ও মস্কো উভয়ই শান্তি চুক্তির দিকে অগ্রগতি দেখানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চাপে রয়েছে।

ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টা নিয়ে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বুধবার ফের কথা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ সময় ইউক্রেনীয় নেতাকে শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার দখলকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করার জন্য তিরস্কার করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন হুমকি দিয়েছে, কিয়েভ ও মস্কো যদি মার্কিন শান্তি চুক্তিতে সম্মত না হয়, তাহলে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর চেষ্টা থেকে সরে আসবে যুক্তরাষ্ট্র।