ইইউ-ইউক্রেন: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে আশার আলো, এবার রাশিয়ার পালা

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ইউক্রেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত দশম সহযোগিতা কাউন্সিল বৈঠকে উভয়পক্ষ রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। সম্প্রতি সৌদি আরবে মার্কিন ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। তবে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধের ইচ্ছা প্রকাশের ওপরই এখন সবকিছু নির্ভর করছে বলে উভয় পক্ষ জোর দিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা

বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করে, তবে এটি শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এখন রাশিয়ার শান্তি প্রতিষ্ঠার আন্তরিকতা প্রমাণ করার সময়।’

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামহালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইইউ-এর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস। ইউরোপীয় কমিশনের সম্প্রসারণ বিষয়ক কমিশনার মার্টা কোসও বৈঠকে অংশ নেন।

রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ইইউ ‘জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিমালা অনুযায়ী একটি সার্বিক, ন্যায়সঙ্গত এবং স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আলোচনার ফলাফলকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি, ইইউ এবং ইউক্রেন বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাশিয়ার অব্যাহত আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সম্প্রতি ক্রিভি রিহ-এর আবাসিক এলাকায় হামলায় নয় শিশুসহ ২০ জনের মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ক্রিভি রিহ-এর আবাসিক এলাকায় রাশিয়ার সাম্প্রতিক নৃশংস হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

ইইউ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা, সার্বভৌমত্ব এবং ইইউতে যোগদানের প্রক্রিয়ায় সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে ইইউ ১৪৪ বিলিয়ন ইউরো (১৫৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) সহায়তা প্রদান করেছে, যার মধ্যে ৪৯.৬ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তা।

ইইউ ইউক্রেনের সংস্কার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির প্রশংসা করেছে এবং ইইউতে যোগদানের প্রক্রিয়ায় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। ‘ইউক্রেন এবং তার নাগরিকদের ভবিষ্যৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেই নিহিত’ বলে জোর দিয়েছে ইইউ।

যুদ্ধের মধ্যেও ইইউ-ইউক্রেন বাণিজ্য ক্রমবর্ধমান এবং প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, মহাকাশ গবেষণা, প্রশাসন এবং আইনের শাসনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে।

রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ না করা এবং ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার সম্পদ ‘জব্দ থাকবে’ বলে ইইউ জোর দিয়েছে।