পারমাণবিক ইস্যু: ইরানের সঙ্গে ‘সরাসরি’ বৈঠকে বসছে যুক্তরাষ্ট্র
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান আগামী শনিবার ‘সরাসরি আলোচনা’ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, আলোচনা সফল না হলে ইরানের সামনে বড় বিপদ রয়েছে। এদিকে ইরানের পক্ষ থেকেও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু
হোয়াইট হাউস সূত্র নিশ্চিত করেছে, পারমাণবিক চুক্তি ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠকটি হবে আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) ওমানের রাজধানী মাস্কাটে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ‘খুব উচ্চ পর্যায়ে’ আলোচনা হবে। সম্ভবত একটি চুক্তি হতে চলেছে, যা দুর্দান্ত হবে।
সোমবার ওভাল অফিসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, শনিবার ইরানের সঙ্গে আমাদের একটি খুব বড় বৈঠক আছে এবং আমরা সরাসরি তাদের সঙ্গে কাজ করছি।
একইসঙ্গে ট্রাম্প কিছুটা হুমকি দিয়ে বলেন, যদি কোনও চুক্তি না হয় তবে এটি ইরানের জন্য খুব খারাপ দিন হবে। আলোচনা সফল না হলে ইরান ‘বড় বিপদে’ পড়বে। ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের সঙ্গে এ বৈঠকের ঘোষণা এমন সময় দিলেন, আগমুহূর্তেই হোয়াইট হাউসে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে দেশটিতে সামরিক আক্রমণের পক্ষে নেতানিয়াহু।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে আর বিস্তারিত কিছু জানাননি। এরইমধ্যে আলোচনা কতটা এগিয়েছে বা কোন কর্মকর্তারা এতে অংশ নিচ্ছেন তা প্রকাশ করা হয়নি।
তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক এক্স পোস্টে তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটন ও তেহরান আগামী ১২ এপ্রিল ওমানে বৈঠক করবে। এটি পরীক্ষার মতোই একটি সুযোগ। বল এখন আমেরিকার কোর্টে।’
গত মাসে ট্রাম্প আরব আমিরাতের একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ইরানের প্রেসিডেন্টকে একটি চিঠি পাঠিয়ে আলোচনার জন্য তার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তবে ইরান সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
কয়েক দশক ধরে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক নীতি হিসেবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন। ওই চুক্তিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড সীমিত করার এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের দেশটি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া শর্ত ছিল। যাতে নিশ্চিত করা যায় যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো কেবল বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, অস্ত্র তৈরির জন্য নয়।
বিনিময়ে ইরানকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যা দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ওই চুক্তিতে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্য যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছিল।
তবে ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন। তার অভিযোগ ছিল, ইরান ইরান ক্রমবর্ধমানভাবে তার শর্ত লঙ্ঘন করেছে। ইউরেনিয়ামের বিশাল মজুদ তৈরি করেছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বারবার ইরানের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা উত্থাপন করেছেন এবং বৈঠকের ভেন্যু ও দিনতারিখও এখন প্রকাশ্য।
শেষপর্যন্ত যদি কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারেন তবে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখাকে নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করে।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, আমরা ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই এই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ যে ইরান কখনও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না।
নেতানিয়াহু বলেন, যদি এটি কূটনৈতিকভাবে সম্পূর্ণরূপে করা যায়, যেমনটি লিবিয়ায় করা হয়েছিল, আমি মনে করি এটি একটি ভাল জিনিস হবে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.