যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস মধ্যস্থতাকারী মিশর ও কাতারের কাছ থেকে প্রাপ্ত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। শনিবার সংগঠনটির প্রধান খলিল আল-হাইয়া এক টেলিভিশন ভাষণে এ তথ্য জানান।

আল-হাইয়া

‘দুই দিন আগে আমরা মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে একটি প্রস্তাব পেয়েছি। আমরা ইতিবাচকভাবে তা বিবেচনা করেছি এবং গ্রহণ করেছি,’ হাইয়া বলেন।

হামাসের আলোচনা দলের নেতা হাইয়া আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি (ইসরায়েলি) দখলদারিত্ব এটিকে নস্যাৎ করবে না।’ ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে চলমান পরোক্ষ আলোচনায় তিনি হামাসের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছিল, নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে মিশর ইসরায়েলের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে। এই প্রস্তাবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায় রয়েছে।

সূত্রমতে, প্রস্তাব অনুযায়ী হামাস প্রতি সপ্তাহে তাদের আটক পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাব নিয়ে একাধিক আলোচনা করেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় করে একটি পাল্টা প্রস্তাব মধ্যস্থতাকারীদের কাছে পাঠিয়েছে।

রয়টার্স ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে প্রশ্ন করেছে যে তারাও কি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে কিনা, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি

১৫ মাসের যুদ্ধের পর ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। এতে যুদ্ধ বন্ধ, হামাসের হাতে আটক কিছু ইসরায়েলি বন্দীর মুক্তি এবং কিছু ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

তিন-ধাপের চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে বাকি বন্দীদের মুক্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনার কথা। হামাস বলেছে, যেকোনো প্রস্তাবে দ্বিতীয় ধাপ শুরু করার সুযোগ থাকতে হবে। অন্যদিকে ইসরায়েল ৪২ দিনের প্রথম ধাপটির সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছে।

হামাসকে নিরস্ত্র করার জন্য ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় হাইয়া বলেছেন, সংগঠনটির অস্ত্রভাণ্ডার একটি লাল রেখা এবং যতক্ষণ ‘ইসরায়েলি’ দখলদারিত্ব বিদ্যমান থাকবে, ততক্ষণ তারা নিরস্ত্র হবে না।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ব্যবস্থাপনায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকতে পারবে না।

এদিকে, শনিবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক হামলায় কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ গাজায় তথাকথিত নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারণের জন্য রাফাহ এলাকার জেনিনা এলাকায় ‘স্থল অভিযান’ শুরু করেছে।

১৮ মার্চ ইসরায়েল গাজায় বোমা হামলা এবং স্থল অভিযান পুনরায় শুরু করে, যা তারা বলেছে, বন্দীদের মুক্তির জন্য হামাসের ওপর চাপ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে।

তারা উত্তর ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাকে ইসরায়েলি অঞ্চলে রকেট হামলার কথা উল্লেখ করে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণে ৫০,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।