রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিবর্তে আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় দেশগুলি বৃহস্পতিবার প্যারিসে এক শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিবর্তে আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে একটি ‘আশ্বস্তিমূলক’ বাহিনী মোতায়েনের জন্য ব্রিটেন এবং ফ্রান্স কাজ করছে, যদিও এই প্রস্তাবে সর্বসম্মতি নেই।

ভলোদিমির জেলেনস্কি, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও কির স্টারমার

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনার খবর ইউরোপে চাঞ্চল্য সৃষ্টির পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউক্রেনের অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্ররা উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও, শান্তিচুক্তি এখনও অনেক দূরে বলেই মনে হচ্ছে।

শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত ইউরোপীয় রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা ‘সদিচ্ছা জোট’ এর মধ্যে মতবিরোধ প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষত, যুদ্ধ-পরবর্তী ফরাসি-ব্রিটিশ বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাবে সবাই সম্মত হননি।

জেলেনস্কি শীর্ষ সম্মেলনের পর বলেন, ‘পুতিন সত্যিই ইউরোপ ও আমেরিকাকে বিভক্ত করতে চান।’ তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কঠোর অবস্থানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সবাই বুঝতে পেরেছে যে আজ রাশিয়া কোনো ধরনের শান্তি চায় না।’

এলিসি প্রাসাদে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শান্তি প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তুলে নেওয়া উচিত নয় বরং আরও কঠোর করা উচিত – এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ পায়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার জেলেনস্কির সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সময় নয়, বরং কীভাবে আমরা নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করতে পারি তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, যুদ্ধবিরতি ছাড়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া ‘গুরুতর ভুল’ হবে।

ম্যাক্রোঁ জানান, যুদ্ধের পর ‘আশ্বস্তিমূলক’ বাহিনী মোতায়েনে ফ্রান্স ও ব্রিটেন কাজ করছে। তবে এই বাহিনী শান্তিরক্ষী বাহিনী নয় এবং সকল ইউরোপীয় মিত্র এতে অংশগ্রহণ করবে না।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনার প্রতি তার আপত্তি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া এখনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।