জাতিসংঘ: গাজায় মাত্র দুই সপ্তাহের খাবার মজুদ, লাখ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বৃহস্পতিবার সতর্ক করে জানিয়েছে যে গাজায় মাত্র দুই সপ্তাহের খাবার মজুদ রয়েছে। ফলে, লাখ লাখ মানুষ তীব্র অনাহার ও অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

ম্যাপে গাজা উপত্যকার অবস্থান

রোম-ভিত্তিক সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডব্লিউএফপি'র গাজায় প্রায় ৫,৭০০ টন খাদ্য মজুদ রয়েছে - যা সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের জন্য ডব্লিউএফপি'র কার্যক্রম চালানোর জন্য যথেষ্ট।’

প্রায় এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করে, যা ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে আনা আপেক্ষিক শান্তি ভেঙে দেয়।

জাতিসংঘ বুধবার জানিয়েছে যে, পুনরায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানের কারণে মাত্র সাত দিনের মধ্যে ১ লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েল গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দেওয়ায় সরবরাহ কমে যাওয়ার বিষয়েও সংস্থাটি সতর্ক করেছে।

ডব্লিউএফপি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে তারা এবং খাদ্য নিরাপত্তা খাতের অন্যান্য সংস্থা ‘তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় নতুন খাদ্য সরবরাহ করতে পারছে না’।

সংস্থাটি বলেছে, ‘গাজায় লাখ লাখ মানুষ আবারও তীব্র অনাহার ও অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়েছে, কারণ গাজায় মানবিক খাদ্য মজুদ কমে আসছে এবং সীমান্ত সাহায্যের জন্য বন্ধ রয়েছে।’

‘এদিকে, গাজায় সামরিক কার্যকলাপের সম্প্রসারণ খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে ব্যাহত করছে এবং সাহায্য কর্মীদের জীবন প্রতিদিন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে,’ ডব্লিউএফপি আরও জানিয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে যে, অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং দ্রুত বাস্তুচ্যুতির কারণে তারা ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, যতটা সম্ভব খাদ্য বিতরণ করবে’।

সংস্থাটি সামগ্রিকভাবে আরও বেশি মানুষকে খাওয়ানোর জন্য ব্যক্তিগত রেশন কমিয়ে আনছে। তারা পাঁচ লাখ মানুষের মধ্যে খাদ্য প্যাকেজ বিতরণ করার পরিকল্পনা করছে, যার অর্থ হলো প্যাকেজগুলি প্রায় এক সপ্তাহের জন্য একটি পরিবারকে খাওয়াতে পারবে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন অভিযানের লক্ষ্য হলো হামাসকে চাপ দেওয়া যাতে তারা অবশিষ্ট বন্দীদের মুক্তি দেয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় ২৫১ জনকে বন্দী করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৫৮ জন এখনও গাজায় আটক রয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে তাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে।

হামাসের হামলায় ১,২১৮ জন ইসরায়েলি মারা গিয়েছিল। জবাবে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে গাজায় কমপক্ষে ৫০,২০৮ জন মানুষ মারা গেছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।