উপদেষ্টা পরিষদে আসছেন নতুন মুখ

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ছে। নতুন কতজন উপদেষ্টা আসছেন, সেটি তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া না গেলেও বুধবার অন্তত দুজন নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছেন উপদেষ্টা পরিষদে, সেটি নিশ্চিত। বঙ্গভবনে আগামীকাল বুধবার নতুন এ উপদেষ্টাদের শপথ হবে। এছাড়া উপদেষ্টাদের কারো কারো দপ্তর বদলেরও ঘোষণা আসতে পারে।

বঙ্গভবনে বুধবার নতুন উপদেষ্টাদের শপথ হবে

আজ মঙ্গলবার বঙ্গভবন ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী সি আর আবরার উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। তাকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে জানান, একজন নতুন উপদেষ্টা শপথ নেবেন, সি আর আবরার, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। বাংলাদেশে তার প্রচুর লেখালেখি আছে; অনেক বিষয়ে তার একটিভিজম আছে। আমরা আশা করছি, তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখবেন। বুধবার বেলা ১১টায় শপথ।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব আরো বলেন, অধ্যাপক সি আর আবরার বুধবার শপথ নেবেন। প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ অনেক দিন ধরেই বলছিলেন, তিনি একসঙ্গে দুটি মন্ত্রণালয় কাজ করতে পারছেন না। যেহেতু উনি অ্যাডভান্সড স্টেজে, প্ল্যানিং মিনিস্ট্রিতে অনেক বড় দায়িত্ব ওনার। এজন্য অধ্যাপক সি আর আবরার যুক্ত হচ্ছেন উপদেষ্টা পরিষদে।

এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলামকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ড. আমিনুল ইসলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছিলেন। এর আগে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।

সূত্র জানায়, নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের পাশাপাশি বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তাদের মধ্যে কারো কারো দপ্তর পরিবর্তনের কথা শোনা যাচ্ছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারও দায়িত্ব পরিবর্তনের কথাও শোনা যাচ্ছে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তার পদত্যাগের পর নাহিদের স্থলাভিষিক্ত হন মাহফুজ আলম। মাহফুজ উপদেষ্টা হিসেবে আগেই নিয়োগ পেলেও দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন না।

এছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে গত ২০ ডিসেম্বর মারা যান এ এফ হাসান আরিফ।

উপদেষ্টা পরিষদের একটি সূত্র জানায়, উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যু এবং নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করার পর প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজের দায়িত্বে বেশি মন্ত্রণালয় রাখতে চান না, তাই উপদেষ্টা পরিষদে নতুন মুখ যোগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কয়েক দফায় নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়। রদবদলও হয়েছে একাধিকবার।

বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারে উপদেষ্টা আছেন ২২ জন। উপদেষ্টা মর্যাদায় তিনজন বিশেষ দূত ও বিশেষ সহকারী দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় তিনজন বিশেষ সহকারী তিনটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।