সকল দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘের

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে সকল অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়ের লোগো

জাতিসংঘের এই সংস্থাটি তার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলেছে, `নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়ে সকল অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে উপযুক্ত বিশেষ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা উচিত।'

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) ১২ ফেব্রুয়ারি জেনেভা থেকে `বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসের বিক্ষোভ সংক্রান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ওএইচসিএইচআর মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষাসহ একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি এমন তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়েছে যা সরকারের ওপর রাজনৈতিক দলগুলির প্রভাবের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় নাগরিকদের এবং অধিকার-ধারকদের সরকারি বিষয় পরিচালনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয় এবং সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকারকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছে, নাগরিক-নেতৃত্বাধীন অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক দলগুলির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা মানবাধিকার নীতিমালা মেনে চলে তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা শুরু করুন।’

ওএইচসিএইচআর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এটি একটি প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফিরে আসা বাধাগ্রস্ত করবে এবং বাংলাদেশের ভোটারদের একটি বড় অংশকে কার্যকরভাবে ভোটাধিকার বঞ্চিত করবে।

এটি রাজনৈতিক ও সরকারি জীবনে নারী-পুরুষের মধ্যে বাস্তবসম্মত সমানতা প্রদানকারী আইন ও বিধিমালা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করারও সুপারিশ করেছে, প্রয়োজন ও উপযুক্ত স্থানে অস্থায়ী বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।

শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলি ন্যূনতম সংস্কার নিয়ে এগিয়ে যেতে রাজি হলে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘যদি দলগুলো অতিরিক্ত সংস্কার বাস্তবায়নের পর নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তিন মাস পর্যন্ত বিলম্ব হতে পারে।’

২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার পর ২০২৫ সালের শেষের দিকে এবং ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘মোটামুটিভাবে, নির্বাচনের তারিখ ২০২৫ সালের শেষের দিকে এবং ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্ধারণ করা যেতে পারে।’

বাসস অবলম্বনে