পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, কী বলছেন এই চিত্রনায়িকা

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন। এদিকে পরোয়ানার খবরে পরীমনি বলেছেন, আমি চুপ থাকার মেয়ে নই, অন্যায় হলে কথা বলবোই।

চিত্রনায়িকা পরীমনি

পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত জানিয়েছেন, সাভারের বোট ক্লাবের ঘটনায় মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা মামলায় পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একইসঙ্গে আদালতে হাজির না থাকায় পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়েছে।

একই মামলায় পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত আরও বলেন, নাসির উদ্দিনের মামলায় আজ (রবিবার) অভিযোগ গঠনে শুনানির দিন ধার্য ছিল। অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য পরীমনির পক্ষে সময় চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। আদালত আবেদন নাকচ করে পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন এবং হাজির না থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত বছরের ১৮ এপ্রিল নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেন ঢাকার সিজেএম আদালত। একইসঙ্গে পরীমনিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমনও জারির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ৮ জুন পরীমনি ও তার সহযোগীরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমনি তাকে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি হত্যাচেষ্টার জন্য একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা তার মাথায় ও বুকে লাগে।

মামলাটি তদন্ত করে ২০২৪ সালের এপ্রিলে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে সিজেএম আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই।

পুলিশ ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তদন্তে জুনায়েদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসিরকে মারধর করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই। অন্যদিকে পরীমনির ছোড়া মদের গ্লাসে নাসিরের আঘাত লাগার ঘটনার সত্যতাও মিলেছে।

এদিকে নাসিরের মামলা করার আগে ২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেছিলেন পরীমনি। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ মামলার তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত।

এদিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর এক প্রতিক্রিয়ায় পরীমনি বলেছেন, প্রতিবাদ করার জন্য যদি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় তাহলে সেটি কষ্টের। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো চুপ থাকতেন। কিন্তু আমি চুপ থাকার মেয়ে না, যা সত্যি, তা বলতেই হবে। এটা তো আমার দেশ, আমার ইন্ডাষ্ট্রি। নিজের দেশে কেন নিরাপদে কাজ করতে পারব না। 

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে পরীমনি বলেন, যেহেতু এটি আদালতের বিষয়; আমিও আইনি প্রক্রিয়াতেই হাঁটব। বিষয়টি আমার আইনজীবী দেখছেন।