ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন কারামুক্ত

দীর্ঘ এক যুগ কারাবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন। বুধবার সন্ধ্যায় রফিকুল আমীন ও রাত দশটার দিকে মোহাম্মদ হোসেন কারামুক্তি পান।

ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন

ডেসটিনির ট্রি প্লান্টেশন প্যাকেজের আওতায় গাছ বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ মামলায় বুধবার রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনকে ১২ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম বুধবার এ রায় দেন।

তবে এরই মধ্যে সাজার অতিরিক্ত জেল খেটেছেন রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন। তাই সাজার রায় ঘোষণার সঙ্গে দুইজনকে কারামুক্তির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।

রায়ের পর রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেনের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী বলেন, রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন দুজনই ১২ বছর ৩ মাস জেল খেটেছেন। তাদের সাজা হয়েছে ১২ বছর। তাই তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে। আদালত তাদের কারামুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন।

আর কোনো মামলা না থাকায় সন্ধ্যায়ই কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন। জেলগেটে শত শত স্বজন-সমর্থক তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

অন্যদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে বেরিয়ে আসেন ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর জেল সুপার আল মামুন জানান, মোহাম্মদ হোসেনের মুক্তির কাগজপত্র কারাগারে এলে তা যাচাই-বাছাই শেষে অন্য কোনো মামলা না থাকায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

কারাদণ্ড পাওয়া অন্য ১৭ জন হলেন- হারুনুর রশিদ, গোফরানুল হক, সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, ফারাহ দিবা, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জসীম উদ্দিন, এস এম আহসানুল কবির, জাকির হোসেন, জুবায়ের সোহেল, মোসাদ্দেক আলী, আবদুল মান্নান ও আবুল কালাম আজাদ।

আসামীদের মধ্যে ফারাহ দিবা কারাবন্দি রয়েছেন। তার কারাবন্দির মেয়াদ ১২ বছর পূর্ণ হয়নি। এছাড়া বুধবার রায়ের আগে ডেসটিনির পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারুনুর রশিদ আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকি ১৫ জন আসামী পলাতক রয়েছেন। তারা গ্রেপ্তার হলে বা আত্মসমর্পণ করলে তখন থেকেই শাস্তি কার্যকর শুরু হবে।

এদিকে আদালতের রায়ে আসামিদের আগামী ৬ মাসের মধ্যে মামলায় উল্লিখিত অর্থের দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৪ হাজার ৫১৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫৪ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার কলাবাগান থানায় মামলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২২৭ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক মোজাহার আলী সরকার।