ট্রাম্পের নজরে গ্রিনল্যান্ড, ইইউ বলছে ‘ছুঁতে পারবে না’

ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকার অধীনে আনার দাবি পুনর্ব্যক্ত করার পর ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সার্বভৌম অঞ্চলের ওপর যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

জঁ-নোয়েল বারো

বুধবার রেডিও স্টেশন ফ্রান্স ইন্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি গ্রিনল্যান্ডসহ সকল ইইউ সদস্য রাষ্ট্র এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। গ্রিনল্যান্ড একটি স্বায়ত্তশাসিত ডেনীয় অঞ্চল এবং ইইউ-এর সঙ্গে সংযুক্ত একটি বিদেশি দেশ ও অঞ্চল।

সিএনবিসির বরাত দিয়ে বারো বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বের কোনো দেশকে — বিশেষ করে রাশিয়াকে — তার সার্বভৌম সীমান্তে আক্রমণ করতে দেবে না। আমরা একটি শক্তিশালী মহাদেশ এবং আমাদের অবশ্যই নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’

যদিও বারো আমেরিকা গ্রিনল্যান্ডে সরাসরি সামরিক আক্রমণ চালাবে বলে মনে করেন না, তবুও তিনি বিশ্বের ক্ষমতার পরিবর্তনশীল গতিবিধি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে আমি কি মনে করি আমেরিকা গ্রিনল্যান্ড আক্রমণ করবে, তাহলে উত্তর হলো না। কিন্তু আমরা কি 'যোগ্যতমের বেঁচে থাকা'র যুগে প্রবেশ করেছি? উত্তর হলো হ্যাঁ।’

বারোর এই মন্তব্য গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুতে এগেদে এবং ডেনমার্কের রাজা ফ্রেডেরিকের মধ্যে কোপেনহেগেনে একটি বৈঠকের ঠিক আগে এসেছে। যদিও কোনো আনুষ্ঠানিক এজেন্ডা প্রকাশ করা হয়নি, এই বৈঠকটি রাজকীয় প্রতীকের আপডেটের সঙ্গে মিলে যায়, যার মধ্যে গ্রিনল্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতীকও রয়েছে, যা ডেনমার্কের সঙ্গে অঞ্চলটির সম্পর্কের উপর নতুন করে জোর দেয়।

গত মাসে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণকে আমেরিকার জাতীয় এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে পুনর্ব্যক্ত করার পর এই বিতর্ক নতুন করে শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালে ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতিত্বকালে প্রথমবারের মতো এই প্রস্তাব উত্থাপিত হলে ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ড উভয়ই তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। প্রধানমন্ত্রী এগেদে গত মাসে দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, ‘আমরা বিক্রির জন্য নই।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের গ্রিনল্যান্ডে ‘অনানুষ্ঠানিক’ সফর বিতর্কে আরও ঘি ঢেলেছে।

বারোর কঠোর প্রতিক্রিয়া ইইউ-এর সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলো রক্ষা করার প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়। গ্রিনল্যান্ড, যদিও ইইউ সদস্য নয়, ডেনমার্কের মাধ্যমে এই জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এর কৌশলগত অবস্থান এবং প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ এটিকে দীর্ঘদিন ধরে ভূ-রাজনৈতিক আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।