ব্রিকসের নতুন সদস্য ইন্দোনেশিয়া: বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন সমীকরণ!

ইন্দোনেশিয়া মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদীয়মান অর্থনীতির জোট ব্রিকসে যোগদানের ঘোষণা দিয়েছে এবং বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

ব্রিকসের লোগো

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—এই পাঁচটি দেশ নিয়ে গঠিত ব্রিকস জোটে গত বছর মিশর, ইরান, ইথিওপিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যোগ দিয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ার যোগদানের মধ্য দিয়ে এই জোট আরও সম্প্রসারিত হলো। বর্তমানে ব্রিকস বিশ্বের প্রায় ৪৮ শতাংশ জনসংখ্যা এবং ৩৭ শতাংশের বেশি বিশ্ব অর্থনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। পাশ্চাত্য বিশ্বের বাইরে এটিই এখন সবচেয়ে শক্তিশালী ভূ-রাজনৈতিক ফোরাম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রোলিয়ানস্যাহ সোয়েমিরাত জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়া ব্রিকসের আলোচিত বিষয়বস্তু, যেমন অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতিতে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘ব্রিকস দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা জোরদার এবং বিশ্বব্যাপী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর মতামত ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নিশ্চিত করার জন্য ইন্দোনেশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম,’ তিনি বলেন।

২০২৩ সালের আগস্টে ব্রিকস নেতারা ইন্দোনেশিয়ার যোগদান অনুমোদন করেছিলেন। তবে, গত বছরের নির্বাচনের পর নবগঠিত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২৫ সালে জোটের আবর্তনশীল সভাপতিত্বকারী ব্রাজিলের সরকার ইন্দোনেশিয়ার যোগদানকে স্বাগত জানিয়েছে।

ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি ও সর্বাধিক জনবহুল দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া অন্যান্য ব্রিকস সদস্যদের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রশাসনিক সংস্থাগুলির সংস্কারের প্রতি সমর্থন এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা জোরদার করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।’

এ বছর `একটি অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রশাসনের জন্য বিশ্বব্যাপী দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বৃদ্ধি' এই প্রতিপাদ্যে ব্রাজিল ব্রিকসের সভাপতিত্ব করছে এবং জুলাই মাসে রিও ডি জেনেইরোতে বার্ষিক নেতৃবৃন্দের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবে।

জাকার্তায় সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষক মুহাম্মদ ওয়াফা খারিশমা বলেছেন, ব্রিকসে যোগদানের প্রতি ইন্দোনেশিয়ার আগ্রহ সম্ভবত সরকারের আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার প্রচেষ্টার অংশ। তবে, ‘ব্রিকস দেশগুলির বিনিয়োগের ধরণ সহযোগী সদস্যদের অগ্রাধিকার দেওয়ার বা রাজনৈতিকভাবে অনুকূল করার কোনও স্পষ্ট প্রবণতা দেখায় না। ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।’

খারিশমা আরও যোগ করেন, ব্রিকসে যোগদান নতুন বিশ্বব্যবস্থার রূপ প্রদর্শনের একটি উপায়ও হতে পারে ইন্দোনেশিয়ার জন্য।