মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতিশ্রুতি দিলেন সিরিয়ার নতুন তথ্যমন্ত্রী

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার দেশে একটি মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-ওমর। কয়েক দশকের কঠোর নিয়ন্ত্রণের পর তারা এখন ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল-ওমর এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী

তিনি বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুসংহত করার জন্য কাজ করছি, যা বাশার আল-আসাদের সরকারের অধীনে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ছিল। সেন্সরশিপের কারণে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে খর্ব হয়েছিল। আমরা এমন একটি গণমাধ্যম ব্যবস্থা পুনর্গঠনের জন্য কাজ করছি, যা হবে মুক্ত, নিরপেক্ষ ও পেশাদার।’

গত ৮ ডিসেম্বর হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনের অবসান ঘটায়। সিরিয়ার ক্ষমতাসীন বাথ পার্টি ও আসাদ পরিবারের শাসনামলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ছিল এবং গণমাধ্যম ব্যবহৃত হতো কেবল শাসকদের স্বার্থে। বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস সিরিয়াকে তার ২০২৪ সালের বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম সূচকের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্থানে স্থান দিয়েছে। তার পেছনে ছিল কেবল ইরিত্রিয়া।

মোহাম্মদ আল-ওমর বর্তমানে এইচটিএস-এর নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী প্রশাসনের তথ্যমন্ত্রী। সিরিয়ার নতুন শাসকরা দেশটির ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতি তাদের সঙ্গে আঞ্চলিক ও পশ্চিমা কূটনীতিকদের সংলাপ গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।

২০১৭ সালে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে এইচটিএস-এর গঠিত স্যালভেশন গভর্নমেন্টের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন আল-ওমর। ইদলিব থেকেই বিদ্রোহীরা দামেস্কের দিকে তাদের দ্রুত অগ্রযাত্রা শুরু করে।

২০১১ সালে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের ওপর আসাদ সরকারের কঠোর দমন-পীড়নের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই সময়ে আসাদ সরকার স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করে। আল-ওমর বলেন, “আমরা সেই একই পথে চলতে চাই না, যেখানে সরকারি মিডিয়ার একমাত্র লক্ষ্য ছিল শাসকদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা।”

আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার গণমাধ্যমগুলো দ্রুত বিপ্লবী চেতনা ধারণ করে নেয়। গত মঙ্গলবার আল-ওমর গণমাধ্যমের ধারা পরিবর্তনের বিষয়ে দেশটির বেশ কিছু সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।