নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ড. ইউনূসের আশ্বাস, মুদ্রাস্ফীতি শীঘ্রই কমবে

আজ সোমবার জনগণের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। বাজার সিন্ডিকেটের রাশ টানতে বিকল্প কৃষি বাজার স্থাপনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ড. ইউনূস।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং তারা বাজারে পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে কেউ যদি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত কয়েক মাসে কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সরবরাহ বৃদ্ধি, আমদানিতে শুল্ক ছাড়, মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ রোধ এবং বাজার তদারকি জোরদার করে দাম কমানোর চেষ্টা চলছে।

পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির বিষয়টি স্বীকার করে ড. ইউনূস বলেন, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি এখনো পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এই সমস্যা সমাধান হলে পণ্যের দাম আরও কমবে বলে আমরা আশা করছি।

পূর্ববর্তী ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামল’ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করার জন্য কাজ করছে।

ড. ইউনূস জানান, ২০২৪ সালের নভেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়ে ৪.১২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় ১৫.৬৩% বেশি। ২০২৪ সালের জুলাই-নভেম্বর সময়ে মোট রপ্তানি আয় ১৬.১১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২.৩৪% বেশি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ১৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

‘এই সূচকগুলো প্রমাণ করে যে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে,’ উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

মুদ্রাস্ফীতি এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ বলে স্বীকার করে ড. ইউনূস বলেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ‘আমরা এখনও পুরোপুরি সফল হইনি, তবে আমি আশাবাদী যে শীঘ্রই মুদ্রাস্ফীতি কমে আসবে।’