দামেস্কে স্বাধীনতার স্বাদ: বাকদাশ আইসক্রিম পার্লারে সিরিয়ানদের উচ্ছ্বাস

১৩ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ ও বাশার আল-আসাদের পতনের পর স্বাধীনতার নতুন সূর্য উঠেছে সিরিয়ায়। এই স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে দেশটির রাজধানী দামেস্কের ঐতিহ্যবাহী বাকদাশ আইসক্রিম পার্লারে ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো সিরিয়ান। দীর্ঘদিন পর হামিদিয়েহ মার্কেটের এই পুরোনো দোকানটি আবার জমজমাট হয়ে উঠেছে।

বাকদাশ আইসক্রিমের জন্য ক্রেতাদের অপেক্ষা

লেবানন থেকে দেশে ফিরে ৪২ বছর বয়সী আনাস ইদ্রিস সোজা ছুটে এসেছেন বাকদাশে। ১৫ বছর পর আবার এই বিখ্যাত আইসক্রিমের স্বাদ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত তিনি। বাকদাশের সিগনেচার মাস্টিক-ইনফিউজড অ্যারাবিক জেলাটোর এক বড় স্কুপ অর্ডার করে তিনি বলেন, ‘খোদার কসম, আইসক্রিমের স্বাদ বদলে গেছে। আগেও ভালো ছিল, এখন আরও ভালো। আমাদের ভেতর থেকে এখন খুশি ঠিকরে বের হচ্ছে।’

শতাব্দী প্রাচীন বাকদাশের আইসক্রিম তৈরির রেসিপিও ঐতিহ্যবাহী। অর্কিডের শিকড় থেকে তৈরি সাহলাবের সঙ্গে নানা উপাদান মিশিয়ে দীর্ঘক্ষণ পিটিয়ে নরম, ইলাস্টিক টেক্সচারে আনা হয়। পেস্তা বাদাম ছড়িয়ে পরিবেশন করা হয় এই আইসক্রিম। এক ডলার মূল্যের এই মিষ্টি স্বাধীনতার মিষ্টতা ছড়াচ্ছে সর্বত্র।

গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাকদাশে দেখা গেল যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা সশস্ত্র যোদ্ধাদেরও। ঠান্ডা আইসক্রিমের স্বাদ উপভোগ করছেন তারা। ২২ বছর বয়সী আহমেদ আসলান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। এখন আমরা নিজেদের গাড়ি নিয়ে সারা সিরিয়া ঘুরতে পারব।’

বাকদাশ পার্লারের অন্যতম মালিক সামির বাকদাশ জানান, আসাদের পতনের পর দোকান খুলে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দমন-পীড়নের শিকার সিরিয়ানদের জন্য এই দোকান আবার চালু করতে পেরে আমি গর্বিত।’

‘আইসক্রিমের রেসিপি হয়তো আগের মতোই, কিন্তু স্বাদ এখন অন্যরকম। কেবল আইসক্রিম নয়, পুরো জীবনটাই বদলে গেছে,’ বললেন পুরোনো একজন গ্রাহক এমান গাজাল।

স্বাধীনতার এই উৎসবে বাকদাশের আইসক্রিম শুধু একটি মিষ্টি নয়, এটি নতুন সিরিয়ার প্রতীক।