বিএনপির ১০ দফা প্রস্তাব: প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার দাবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদে প্রচলিত দ্বারে দ্বারে প্রচারণার পরিবর্তে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির দলীয় পতাকা

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা সঠিক ও নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে চাই। দ্বারে দ্বারে প্রচারণার পরিবর্তে কম্পিউটার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের প্রস্তাব করছি।’

বিএনপির নির্বাচন কমিশন বিষয়ক কমিটি দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

ড. মঈন বলেন, কম্পিউটারাইজড পদ্ধতি ব্যবহার করলে সময় অপচয় ছাড়াই নির্ভুলভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে কেউ ১৮ বছর পূর্ণ করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তালিকায় যুক্ত এবং মৃত ব্যক্তির নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ দেওয়া যাবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের তথ্য যাচাই করে দ্বারে দ্বারে প্রচারণা চালানোর কোনো প্রয়োজন নেই।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, দ্বারে দ্বারে প্রচারণা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, অপ্রয়োজনীয় এবং ত্রুটিপ্রবণ। ভোটার তালিকা সংস্কারের প্রস্তাবে আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি হালনাগাদ করতে হবে।

তিনি ১০ দফা সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে রয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার কিছু নিয়ম সংশোধন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধি সংশোধন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নীতিমালায় পরিবর্তন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা উন্নত করা, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গণমাধ্যমের জন্য পৃথক নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন।

বিএনপি নেতা বলেন, তারা ইতোমধ্যে সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কাছে এই সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, তারা এমন একটি সমতল মাঠ তৈরির লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়ন করেছেন যাতে জনগণ সত্যিকার অর্থে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে, নকল বা ভুয়া প্রতিনিধি নয়।

‘বিগত সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচনে কারচুপির অনেক কিছু করেছে। তাই আমরা ফ্যাসিবাদী সরকার কর্তৃক প্রণীত নিয়মকানুন সংশোধনের দাবি জানিয়েছি যাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারেন,’ বলেন বিএনপি নেতা।

বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, তাদের দলের দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে সরকার দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে।

‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা, নির্বাচন সচিবালয় স্থাপন এবং তাদের পর্যাপ্ত ক্ষমতা প্রদানের কথা বলেছি। আমরা বিদ্যমান আইন সংশোধন ও সংস্কারেরও প্রস্তাব করেছি... এসবের জন্য খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন নেই,’ তিনি বলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন করে তিন-চার মাসের বেশি সময় লাগবে না নির্বাচনের আয়োজন করতে।

তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল বাধা দূর করতে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের প্রস্তাব করেছেন।