রোনালদোর মতো হতে চাওয়া সেই ফিলিস্তিনি কিশোর আর নেই!

সারা বিশ্বের অগণিত শিশু-কিশোরের মতো ফিলিস্তিনি কিশোর নাজি আল-বাবাও স্বপ্ন দেখতো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো একজন বিশ্বখ্যাত ফুটবলার হওয়ার। কিন্তু মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়ে সেই স্বপ্ন চিরতরে অধরাই থেকে গেল। অধিকৃত পশ্চিম তীরে জন্ম নেওয়া একটি ছেলের এমন স্বপ্ন দেখার অধিকারটুকুও কেড়ে নিল বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনি কিশোর নাজি আল-বাবা

গত ৩ নভেম্বর, স্কুল থেকে ফিরে দুপুরের খাবার শেষে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে বের হয়েছিল নাজি। প্রতিদিনের মতোই এটি ছিল তার রুটিন। কিন্তু কে জানতো, এটাই হবে তার জীবনের শেষ খেলা!

হঠাৎ করেই ইসরায়েলি বাহিনী এলাকায় ঢুকে খেলতে থাকা শিশু-কিশোরদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। নাজিকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও নাজিকে প্রায় ৩০ মিনিট কোনো চিকিৎসা দিতে দেওয়া হয়নি। পরে ইসরায়েলি সেনারা তাকে হালহুলের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাজির জার্সি নিয়ে সতীর্থ খেলোয়াড়রা

নাজির বাবা নিদাল আল-বাবা বলেন, ‘অন্যদিনের মতো সেদিনও তাকে বিদায় দিয়েছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি, সেটাই হবে তার শেষ দিন, আমার দেওয়া বিদায় ছিল শেষ বিদায়।’

খেলতে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই অন্য কিশোররা তাকে ডাকতে আসে। ইসরায়েলি সেনারা নাজিকে গুলি করেছে শুনে তারা দৌড়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে ইসরায়েলি সেনাদের কাছে নাজিকে গুলি করার কারণ জানতে চাইলে তাদেরও মারধর করে হাত বেঁধে ৪০ মিনিটের মতো ফেলে রাখা হয়।

নাজির মা সামাহার আল-জামারা বলেন, ‘নাজি ছিল সবার প্রিয়পাত্র। সে কখনো কারো অনুরোধ ফিরিয়ে দিত না। তার হাসি আমাদের জীবনের এক বড় অংশ ছিল। তাকে হারানো আমাদের জন্য অপরিসীম কষ্টের।’

স্থানীয় হালহুল স্পোর্টস ক্লাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করে নাজি তার ফুটবলের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করতো। সহপাঠী, প্রতিবেশীরা তাকে একজন হাসিখুশি, উদার ও সহানুভূতিশীল কিশোর হিসেবে মনে করত।

সূত্র: আল জাজিরা