ইইউ রাষ্ট্রদূত: রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান ‘রাজনৈতিক’

রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার। তিনি বলেছেন, ‘সমগ্র কক্সবাজার’ সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে হবে।

মাইকেল মিলার, ডানদিকে থেকে দ্বিতীয়

সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, ‘বাংলাদেশ, ইইউ এবং সর্বোপরি রোহিঙ্গারা নিজেরাই প্রত্যাবাসন চায়। তবে, নিরাপদ, টেকসই, স্বেচ্ছায় এবং সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয়নি।’

এই অবস্থায়, শরণার্থীদের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য কার্যক্রমের ‘বিবর্তন’ প্রয়োজন, বলেন রাষ্ট্রদূত।

তার মতে, দাতা সংস্থার অর্থ দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে দৃঢ় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওেয়া এই বিবর্তনের অংশ। এর জন্য বেশ কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘এর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ উন্মুক্ত করতে হবে যাতে তারা অপরাধ, শোষণ এবং মিয়ানমারে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য প্রলুব্ধ না হয়।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বোঝা স্বীকার করে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কক্সবাজার এবং ভাসানচরে ১৩ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

২০২৪ সালে, ইইউ রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৩ মিলিয়ন ইউরো মানবিক সহায়তা বরাদ্দ করেছে। পরবর্তী তিন বছরে আরো ৩৫ মিলিয়ন ইউরো উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করবে।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘আমরা শরণার্থী ও স্থানীয় উভয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করছি। কক্সবাজারের বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে, বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের কথা শুনতে, এবং আমাদের অর্থায়নের সর্বাধিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে অক্টোবরে কক্সবাজার সফর করেছি।’

শিবিরে ‘নিরাপত্তাহীনতা’ সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে তিনি জানান।

ইইউ প্রতিনিধি বলেন, ‘শিবিরের বাইরে, স্থানীয় অর্থনীতি এবং শিবিরের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় করার জন্য আমরা কাজ করেছি এবং করে যাচ্ছি। আমরা ঢাকার সঙ্গে মিলিত ভাবে ‘সমগ্র কক্সবাজার’ পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করব।’

নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম।