ইমরানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে পাকিস্তানে ছয়জনের মৃত্যু

কারাবন্দি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার ইসলামাবাদে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপিত বেষ্টনী ভেঙে রাজধানীতে ঢুকে পড়েন ইমরান সমর্থকরা। সরকারের গুলি চালানোর হুঁশিয়ারিও উপেক্ষা করেন তারা।

ছবি - সংগৃহীত

একটি গাড়ি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর চাপা দিলে চার নিরাপত্তাকর্মী এবং এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। পৃথক আরেকটি ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার নিন্দা জানিয়ে ‘অরাজক দল’ কর্তৃক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ করেছেন।

মধ্যরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিক্ষোভকারীরা যদি অস্ত্র ব্যবহার করে তবে নিরাপত্তা বাহিনীও গুলি চালাবে। ‘গুলির জবাব গুলিতেই দেওয়া হবে,’ তিনি বলেন।

পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে। বিক্ষোভে অনেক মানুষ আহত, কিছু সাংবাদিকও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এক ভিডিওগ্রাফারের ওপর ইমরান সমর্থকদের হামলা এবং ক্যামেরা ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া গেছে। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পাকিস্তানি মাধ্যমগুলো বেশিরভাগই সমাবেশের দৃশ্য ধারণ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জনশূন্য রাস্তার দৃশ্য প্রকাশ করছে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) মামলাগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে। প্রশাসন বলেছে, শুধুমাত্র আদালতই ইমরান খানের মুক্তির আদেশ দিতে পারে।

ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবি বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে রেড জোনের দিকে অগ্রসর হতে বলেছেন এবং ইমরানকে মুক্তি না দিলে অন্য কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বিক্ষোভ বিঘ্নিত করতে ৪,০০০ এরও বেশি ইমরান সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশের কিছু অংশে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ। বৃহস্পতিবার আদালত রাজধানীতে সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে।

ইসলামাবাদ ও অন্যান্য শহরের মধ্যে যোগাযোগ প্রায় অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। রাজধানীতে মোবাইল ইন্টারনেট ও মেসেজিং অ্যাপে ব্যাপক ব্যঘাত ঘটছে। পিটিআই ইমরানের মুক্তির দাবিতে সামাজিক মাধ্যমের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল।

বেলারুশের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সরকারি সফরের সময় বিক্ষোভের এই ঘটনা ঘটেছে।