আপনি পড়ছেন

বাকুতে দুই সপ্তাহের টানাপোড়েনের পর অবশেষে প্রায় ২০০টি দেশ জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। তবে ধনী দেশগুলোর বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতিকে ‘অপমানজনক’ আখ্যা দিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলো।

cop 29ছবি - সংগৃহীত

রোববার আজারবাইজানের একটি স্টেডিয়ামে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর ভারত এর তীব্র বিরোধিতা করে। ভারতীয় প্রতিনিধি চাঁদনী রাইনা বলেন, ‘প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ অত্যন্ত কম, এটি নগণ্য। এই নথি চোখের আড়াল করার কৌশল ছাড়া কিছুই নয়। এটি আমাদের বিশাল চ্যালেঞ্জের সমাধান করবে না।’

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো কত অর্থ দরিদ্র দেশগুলোকে দেবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মতবিরোধ চলছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কম দায়ী হলেও দরিদ্র দেশগুলোই এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

ইইউ’র জলবায়ু প্রতিনিধি ওপকে হোয়েকস্ট্রা বলেন, কপ-২৯ ‘জলবায়ু অর্থায়নের নতুন যুগের সূচনা’ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। চুক্তি স্বাক্ষরের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কূটনীতিকরা চূড়ান্ত বাক্য সংশোধন করে যাচ্ছিলেন। ধনী দেশগুলো আরও অর্থ না দিলে আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছিল উন্নয়নশীল দেশগুলো। ‘কোনো চুক্তি না থাকাই খারাপ চুক্তির চেয়ে ভালো’—এই যুক্তিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো চুক্তিতে সই করেছে, যদিও তাদের চাহিদার চেয়ে অনেক কম পেয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের মধ্যে উন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি গড়তে এবং জলবায়ু দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দিতে বাধ্য। আগের প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে এটি বেশি হলেও, উন্নয়নশীল দেশগুলো এটিকে ‘অপমানজনকভাবে কম’ বলেছে। তারা আরও বেশি অর্থ চেয়েছিল।

পাওয়ার শিফট আফ্রিকা থিঙ্কট্যাঙ্কের কেনিয়ান পরিচালক মোহাম্মদ আদো বলেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য এই কপ একটি দুর্যোগ। জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার দাবি করা ধনী দেশগুলোর মানুষ এবং গ্রহ, উভয়ের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।’

১৩৪টি উন্নয়নশীল দেশের একটি গ্রুপ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তুলতে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে কমপক্ষে ৫০০ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিল।

জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সাইমন স্টিল স্বীকার করেছেন যে চুক্তিটি ত্রুটিপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘কোনো দেশ তাদের চাওয়া সবকিছু পায়নি এবং আমরা বাকু ছেড়ে যাচ্ছি এখনও অনেক কাজ বাকি রেখে। বিজয়োল্লাসের সময় নয়।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ চেয়েছিল চীনের মতো নব্য ধনী উদীয়মান অর্থনীতি অবদান রাখুক। চূড়ান্ত চুক্তি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে স্বেচ্ছাসেবীর ভিত্তিতে অবদান রাখতে ‘উৎসাহিত’ করে, যা চীনের জন্য কোনো পরিবর্তন নয়।

ধনী দেশগুলো বলেছে সরাসরি সরকারি অর্থায়নে আরও বেশি প্রত্যাশা করা রাজনৈতিকভাবে অবাস্তব। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈদেশিক সহায়তা, উভয়ের প্রতি সন্দিহান ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরছেন। কিছু পশ্চিমা দেশে সবুজ অ্যাজেন্ডার বিরুদ্ধে ডানপন্থী প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

চুক্তিতে বর্ধমান তাপমাত্রা এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রতি বছর ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি বৃহত্তর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে এর বেশির ভাগ আসবে বেসরকারি উৎস থেকে।

সৌদি আরবের নেতৃত্বে দুবাইয়ের গত বছরের শীর্ষ সম্মেলন থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার আহ্বান হালকা করার প্রচেষ্টা নিয়ে ধনী দেশগুলি এবং ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলি উদ্বিগ্ন। বাকুতে প্রস্তাবিত পাঠ্যগুলিতে দুবাইয়ের ‘জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার’ প্রতিশ্রুতির কোনো স্পষ্ট উল্লেখ নেই।

কিছু দেশের অভিযোগ, তেল-গ্যাস রপ্তানিকারক আজারবাইজানের বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলায় অভিজ্ঞতা ও ইচ্ছাশক্তির অভাব রয়েছে। বিশ্ব যখন তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও প্রাণঘাতী দুর্যোগের মুখোমুখি, তখন আজারবাইজানের এই অভাব উদ্বেগজনক।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.