তোফায়েল আহমেদ: সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জরুরি

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, এ ধরনের নির্বাচন নতুন নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।

ড. তোফায়েল আহমেদ

শনিবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. তোফায়েল, যিনি পাঁচ দশক ধরে স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে কাজ করেছেন, বলেন, ‘বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমাদের আলোচনায় সবাই একমত হয়েছেন যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। স্থানীয় নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বাড়াবে এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করবে।’

‘বর্তমানে কোনো সুসংহত ব্যবস্থা নেই। এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা,’ তিনি বলেন।

ড. তোফায়েল আরও বলেন যে বর্তমান সময়টি এই সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য আদর্শ, কারণ বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার অকার্যকর, শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদগুলিই কার্যকর রয়েছে।

‘যদি আমরা একটি সুসংহত ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি, তাহলে একটি সমন্বিত আইন প্রণয়ন করা সম্ভব হবে যা সকল প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করবে এবং তাদের সকলের জন্য নির্বাচন আয়োজন ও পরিচালনা করা সম্ভব হবে,’ তিনি আরও বলেন।

তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মতো সফল স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উদাহরণ দিয়ে বলেন যে সেখানে মেয়র ও চেয়ারম্যান সরাসরি নির্বাচিত হন না। বরং কাউন্সিলর ও সদস্যরা নির্বাচিত হন এবং তারা কাউন্সিলের মধ্যে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করেন।

ড. তোফায়েল জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশেরও একই রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এতে স্থানীয় নির্বাচনের খরচ কমবে, সময় বাঁচবে এবং জনবলের প্রয়োজনীয়তাও কমবে।

তিনি আরও বলেন, এক হিসেবে দেখা গেছে, পূর্ববর্তী কমিশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে প্রায় ২৩,০০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, ১৯ থেকে ২০ লাখ লোক জড়িত ছিল এবং প্রায় ২২৫ দিন সময় লেগেছে। সংসদীয় পদ্ধতি চালু করা হলে খরচ কমে প্রায় ৬০০ কোটি টাকায় নেমে আসবে, মাত্র ৮ লাখ লোকের প্রয়োজন হবে এবং মাত্র ৪৫ দিনে নির্বাচন শেষ করা যাবে।

ড. তোফায়েল প্রশ্ন তোলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা কি সম্ভব? তিনি বলেন, বর্তমান কাঠামোতে পাঁচটি আলাদা আইনের অধীনে পাঁচটি পৃথক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এগুলি সম্পন্ন করা সম্ভব কিনা সে বিষয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন।