অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৭৫ জনের মৃত্যু

গত অক্টোবর মাসে সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনায় ৫৭৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এই করুণ তথ্য উঠে এসেছে। এই সময়কালে মোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যাতে ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।

ছবি - সংগৃহীত

শনিবার এক বিবৃতিতে সমিতি জানায়, দুর্ঘটনার অর্ধেকেরও বেশি ঘটেছে পথচারীদের গাড়ির ধাক্কার কারণে। এক-চতুর্থাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে এবং ১৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে। উল্লেখযোগ্য হলো, ৩৮ শতাংশের বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে।

সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবরে দুর্ঘটনা ও আহতের সংখ্যা কিছুটা কমলেও, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ৫৪৭টি দুর্ঘটনায় ৫৫৪ জন মারা গিয়েছিল এবং ১০৩৮ জন আহত হয়েছিল।

সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের পর রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় ট্রাফিক আইন ভঙ্গের প্রবণতা বেড়েছে। মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন, বিশেষ করে নাসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রার মতো ছোট যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন মৃত্যুর অন্যতম কারণ।’

তিনি মোটরসাইকেলের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশি মোটরসাইকেল রয়েছে, যা আমাদের সড়কের ধারণক্ষমতার অনেক বেশি। অন্যান্য দেশের তুলনায় এই সংখ্যা অস্বাভাবিক। ব্যাটারিচালিত রিকশা শুধুমাত্র গ্রামাঞ্চলে চালানো উচিত।’

প্রতিবেদনে দেখা যায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ৩৪ শতাংশ। রেল দুর্ঘটনায় ৬৩টি ঘটনায় ৭৬ জন মারা গেছে এবং ২৪ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছে।

দুর্ঘটনা কমাতে ধীরগতির এবং দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন তৈরির সুপারিশ করেছে সমিতি। সড়ক চিহ্ন, রোড মার্কিং এবং স্ট্রিট লাইটের অভাব, বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট গর্ত, অনভিজ্ঞ চালক, অযোগ্য যানবাহন, ওভারলোডিং, বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানোকে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা।