ফখরুল: বাংলাদেশে আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা সম্ভব নয়

আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

তিনি বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যান করেছি। দেশের প্রেক্ষাপটে এই ব্যবস্থা সম্ভব নয়।’

বর্তমানে বাংলাদেশে ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ বা এফপিটিপি ব্যবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কোনো নির্বাচনী এলাকায় সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী বিজয়ী হন।

অন্যদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় কোনো আসনভিত্তিক প্রার্থী থাকে না। ভোটাররা দলীয় প্রতীকে ভোট দেন এবং কোনো দল সংসদে কতটি আসন পাবে তা তাদের প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হারের অনুপাতে নির্ধারিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল আওয়ামী লীগের ‘বিভাজন সৃষ্টির সফল প্রচেষ্টার’ পর জনগণের মধ্যে ধৈর্য ও ঐক্যের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই বিভাজন দূর করে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐক্য থাকতে হবে।’

‘একটি জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হওয়া চলবে না। ১৭ বছরের আবর্জনা ১৭ দিনে বা ১৭ মাসেও সরানো সম্ভব নয়। তাই, এই সরকারকে সময় দেওয়া উচিত।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা যাচাই করেছি যে, জনগণ সকলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। আমরা মনে করি, এই নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার জন্য সব ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। তাই আমরা বলে আসছি যে, যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এবং এই রোডম্যাপ সরকারকে দেওয়া উচিত।’

সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারকে এগুলোর বেশিরভাগই করতে হবে না। এটি নির্বাচিত একটি সংসদ করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ভারতের বাংলাদেশবিরোধী অব্যাহত প্রচারণাকে একটি বড় বিপদ বলেও সতর্ক করেছেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বাংলাদেশের অর্জনগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। আমাদের সাবধান থাকতে হবে, কারণ এই মুহূর্তে আমরা আর একটি বিপর্যয় সামাল দিতে পারব না। ফ্যাসিবাদের মূল ষড়যন্ত্রকারী ভারতে থাকায় আমাদের মাথার ওপর বিপদ ঝুলছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়েছে।