‘বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে’ কলকাতার ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত!

গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর থেকে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী মার্কেটগুলোতে বাংলাদেশি পর্যটক-ক্রেতার প্রবল খরা দেখা দিয়েছে। একবারে মড়ক লাগার মতো অবস্থা। ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে অনেকের, কেউ কেউ তো দোকানপাট সাময়িকভাবে বন্ধও করে দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাকালের লকডাউনের দুঃস্বপ্ন যেন ফিরে এসেছে।

কলকাতার একটি ক্রেতাশূন্য মার্কেট

কলকাতার সেন্ট্রাল এলাকার প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে আছে শতাধিক হোটেল ও তিন হাজারেরও বেশি দোকানপাট। বিশ্বের নানা দেশের পর্যটক আসলেও বাংলাদেশিদের আধিক্যের কারণে এলাকাটি 'মিনি বাংলাদেশ' নামে পরিচিত। বাংলাদেশিদের কাছেও এটি ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভ্রমণের একটি প্রিয় গন্তব্য।

কিন্তু ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর থেকেই এ চিত্র বদলে যায়। আন্দোলন শেষ হলেও ক্রেতা-পর্যটক ফেরেনি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব সরাসরি পড়েছে কলকাতার বাজারে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশি পর্যটক-ক্রেতার অভাবে 'মিনি বাংলাদেশ' এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।

একদিকে বাংলাদেশিদের ভ্রমণে উৎসাহ কমেছে, অন্যদিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভিসা প্রদানে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য কারণে ভিসা দেওয়া হচ্ছে না বলেই বাংলাদেশিদের কলকাতা ভ্রমণ প্রায় বন্ধ।

মারকুইস স্ট্রিট, সাডার স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিটসহ ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়িক এলাকার ১২০টি হোটেলের ধারণক্ষমতার মাত্র ১০-১৫ শতাংশ পূরণ হচ্ছে। অথচ এই সময়ে সাধারণত ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকড থাকে।

কলকাতা হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির এক নেতা জানান, তার ৩০ কক্ষের হোটেলে এখন মাত্র চার-পাঁচজন বাংলাদেশি অতিথি আছেন। অবস্থা এতটাই খারাপ যে, অনেক ছোট হোটেল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ এক-দুজন অতিথি নিয়ে হোটেল চালানো অসম্ভব।

নিউ মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখন শুধু মেডিকেল ভিসায় আসা বাংলাদেশিরাই তার দোকানে আসেন। আগে যারা বেড়াতে বা ব্যবসার জন্য আসতেন, তারা এখন আর আসছেন না। এই অবস্থা চলতে থাকলে 'মিনি বাংলাদেশের' অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।