আফগানদের উড়িয়ে সমতায় টাইগাররা

ব্যাটাররা এনে দিয়েছেন লড়াইয়ের শক্ত ভিত। সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আলো ছড়িয়েছেন বোলাররা। ব্যাটে-বলে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ। আজ শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের বিপক্ষে ৬৮ রানের বড় জয় পেয়েছে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে ৯২ রানে হেরেছিল তারা।

নাজমুল হোসেন শান্তর ৭৬ রানের ইনিংসের ওপর দাঁড়িয়ে আড়াই শ’ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৫২ রান করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নামা আফগানিস্তানকে ১৮৪ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সমতায় (১-১) ফিরল টাইগাররা। আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে সিরিজের অলিখিত ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।

রান তাড়ায় আফগানদের শুরুটা বাজে হলেও ভালোভাবেই ধাক্কা সামলে ওঠে তারা। এক উইকেটে ৭০ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। ৫২ রানের জুটি গড়েন ওপেনার সেদিকুল্লাহ আটাল ও রহমত শাহ। ৩৯ রানে সেদিকুল্লাহর বিদায়ে ভাঙে জুটি। এরপর অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে ৪৮ রান যোগ করেন রহমত। এই দুজনকে আউট করে ম্যাচে ফের বাংলাদেশ।

সাত বলের ব্যবধানে তিন উইকেট নিয়ে আফগানদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় টাইগাররা। সেদিকুল্লাহ ৫১ বলে ৩৯ ও রহমত ৭৬ বলে ৫২ রানে আউট হন। এরপর নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট নিয়ে আফগানদের দুশোর আগেই অলআউট করে বাংলাদেশ। হাসমতউল্লাহ ৪০ বলে ১৭, গুলবাদিন নাইব ২৫ বলে ২৬, মোহাম্মদ নবি ২১ বলে ১৭ ও রশিদ খান ১৬ বলে ১৪ রানে আউট হন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল নাসুম আহমেদ। ব্যাট হাতে অবদান রাখার পর বোলিংয়েও জ্বলে উঠেছেন এই স্পিনার। ২৮ রানে তিন উইকেট নেন নাসুম। দুটি করে শিকার মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমানের। একটি করে উইকেট পান তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। তবে দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল।

এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ছিল দারুণ। ঝোড়ো শুরু হয় তাদের। এর খেসারতও দিতে হয়েছে। দ্রুত গতিতে রান তুলতে গিয়ে নিজের উইকেট দিয়ে এসেছেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ১৭ বলে ২২ রানে আউট হন তিনি। চতুর্থ ওভারে তার বিদায়ে ভাঙে ২৮ রানের জুটি। এরপর ৬১ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক নাজমুল।

দলীয় শতকের আগ মুহূর্তে বিদায় নেন সৌম্য। ৪৯ বলে ৩৫ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার। দুই ওপেনার ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন নাজমুল। শতকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন এই ব্যাটার। দুই উইকেটে দেড় শ’ পার করেছিল বাংলাদেশ। তখন বড় সংগ্রহের আশা ছিল দলের। কিন্তু এরপরই কমে আসে রানের গতি। লড়াইয়ে ফেরে আফগানরা।

মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৩ বলে ২২ রান করে আউট হন। ১৬ বলে ১১ রানে ফেরেন তাওহিদ হৃদয়। শেষ দিকে ঝড় ওঠে জাকের আলি অনিক ও নাসুমের ব্যাটে। ২৪ বলে ২৫ রান করেন নাসুম। ২৭ বলে ৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংসে অপরাজিত থাকেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা জাকের। তবে লড়াকু সংগ্রহের আসল নায়ক নাজমুল।

সেঞ্চুরিরও আভাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু ১১৯ বলে ৭৭ রানে আউট হয়ে যান নাজমুল। ইনিংসে ছয়টি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। আফগানিস্তানের পক্ষে নাঙ্গেলিয়া খারোতে নেন তিন উইকেট। দুটি করে শিকার মোহাম্মদ গাজানফার ও রশিদ খানের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৫২/৭ (৫০ ওভার)।
আফগানিস্তান: ১৮৪/১০ (৪৩.৩ ওভার)।
ফল: বাংলাদেশ ৬৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত (বাংলাদেশ)।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতা।