ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন, হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত ইউরোপের নেতারা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আরও ক্ষমতাধর হয়ে ফিরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুরো বিশ্বে মার্কিন প্রভাব নতুন করে নির্ধারিত হতে চলেছে। এই অবস্থায় ইউরোপের নেতারা নিজেদের ভাগ্য মূল্যায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের মতের মিল হবে কিনা, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ইউরোপে কেমন প্রভাব ফেলবে এসব নিয়ে নেতারা নানা হিসাব-নিকাশ করছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা

ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর হাঙ্গেরিতে বৃহস্পতিবার এক শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হন ইউরোপের ৫০ নেতা। তারা ট্রান্স আটলান্টিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছেন এই আশায়, যাতে ট্রাম্পের আগের প্রশাসনের সঙ্গে থাকা কোনো সংকট পুনরায় সৃষ্টি না হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটে। শক্তিশালী রাশিয়ার বিরুদ্ধে তারা নতুন যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে চান।

ট্রাম্পের আগের প্রশাসনের সময় ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি সম্মেলনে বলেন, আমি ট্রাম্পের সঙ্গে চার বছর ধরে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছিলাম। ট্রাম্প স্পষ্টবাদী মানুষ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্য গড়তে হলে আমাদের এক অবস্থানে আসতে হবে। আমি মনে করি এটা অসম্ভব না।

সমাবেশে আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা হয়। রুটে বলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে আটলান্টিকের এপার-ওপার উভয় অঞ্চলে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে সাহায্য করেছে। রাশিয়াও উত্তর কোরিয়ায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র সরবরাহ করেছে। এটা কেবল ন্যাটোর ইউরোপীয় অংশের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও হুমকি।

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল না হওয়ার জন্য ইউরোপীয় মিত্রদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি ন্যাটো দেশগুলোর দেশজ উৎপাদনের ২ শতাংশের বেশি সামরিক খাতে ব্যয় করার পক্ষে মত দেন। জাতীয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল বিষয়টিকে যুক্তিযুক্ত মনে করেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাইছেন। এই অবসান কামনার অর্থ হলো রাশিয়াকে তিনি ইউক্রেনের দখলীয় অঞ্চলে ছাড় দিতে বলবেন। এটাই ইউরোপের জন্য ভয়ের কারণ। এর সঙ্গে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণের বিষয়টি জড়িত। তবে নেতারা আশা করছেন, ট্রাম্পকে তারা বোঝাতে পারবেন।

সম্মেলনের আয়োজক দেশ হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ট্রাম্পের ভক্ত। তিনি ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ইউরোপের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়টি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন। কট্টর ডানপন্থী ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিও ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন ফোনে। ইউরোপের নেতারা মনে করেন, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ, অভিবাসন নীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা ইস্যুতে ইউরোপে কয়েক বছর ধরে প্রভাব পড়তে পারে।

সূত্র: আইরিশ এক্সামিনার