ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে উদ্বিগ্ন ইউরোপ, জেলেনস্কিও ছিলেন

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্সি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউরোপ। প্রায় ৫০ জন ইউরোপীয় নেতা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে বৃহস্পতিবার এক শীর্ষ সম্মেলনে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করেছেন। তারা আশা করছেন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তার প্রথম প্রশাসনের মতো কোনো ঝামেলা হবে না।

ছবি - সংগৃহীত

একদিনের এই সম্মেলনে রাশিয়া ইস্যুতে কঠোর একটি সাধারণ অবস্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন ইউরোপীয় নেতারা।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে (২০১৭-২০২১) নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রুটে। তিনি বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে চার বছর ভালোভাবে কাজ করেছি। তিনি যা চান, তা স্পষ্টভাবে বলেন। তিনি বুঝতে পারেন যে একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে চলতে হবে। আমি মনে করি আমরা তা করতে পারব।’

ইউক্রেনে রাশিয়ার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ আটলান্টিকের উভয় পাড়ের জন্যই ভাবনার কারণ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রুটে বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধে সাহায্যের বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে নতুন প্রযুক্তি দিচ্ছে। এটা শুধু ন্যাটোর ইউরোপীয় অংশের জন্য নয়, আমেরিকার মূল ভূখণ্ডের জন্যও একটা হুমকি।’

ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে ইউরোপীয় ন্যাটো সদস্যদের রক্ষাখাতে বেশি খরচ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন খরচ জাতীয় উৎপাদনের ২% এর বেশি হোক এবং আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমুক। এই ব্যাপারটা গুরুত্ব সহকারে নোট করা হয়েছে।

রুটে বলেন, ‘যখন তিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন তিনিই ন্যাটোতে আমাদের ২% এর ওপরে খরচ করার জন্য উৎসাহ দিয়েছিলেন। আর এখন, তার কর্মকাণ্ডের কারণে, আমেরিকাকে বাদ দিলে ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২% এর ওপরে খরচ করছে।’

২৭ সদস্য বিশিষ্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল এ ব্যাপারে সম্মত হন যে ইউরোপ মহাদেশকে আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের ভাগ্যের ওপর বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। এটা ডোনাল্ড ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিসের জন্য নয়, আমাদের সন্তানদের জন্য।’

নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প ইউরোপের সঙ্গে ব্যবসায়িক যুদ্ধ থেকে শুরু করে ন্যাটো চুক্তি থেকে সরে আসা এবং ইউক্রেন যুদ্ধে সহায়তা পরিবর্তন করার হুমকি দিয়েছেন। এসব ইস্যু ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জন্য গুরুতর পরিণতি নিয়ে আসতে পারে।

ট্রাম্প বলেছেন তিনি পুনঃনির্বাচিত হলে কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করে দেবেন। ইউক্রেন এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা ভয় পাচ্ছে এর অর্থ হতে পারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইউক্রেনের অংশ রাশিয়ার অধীনে চলে যাওয়া। ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যরা ট্রাম্পকে বোঝাতে চান যদি তিনি কোন শান্তি চুক্তিতে সাহায্য করেন, তা ইউক্রেন এবং আমেরিকার জন্য শক্তিশালী অবস্থান থেকে করা উচিত।

সম্মেলনের আয়োজক এবং ট্রাম্পের একজন প্রবল সমর্থক হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, তিনি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং ‘আমাদের ভবিষ্যতের জন্য বড় বড় পরিকল্পনা আছে!’

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ‘রোম এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে ঐতিহাসিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের’ প্রশংসা করেছেন।

২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই অংশীদারিত্ব নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।

জেলেনস্কি তার দেশের জন্য আরও সাহায্যের আবেদন জনাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।