ড. ইউনূস: ‘আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে, আমরাই বিশ্ব’

বৃহস্পতিবার বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জনের জন্য আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

ছবি - সংগৃহীত

‘আমাদের যুবসমাজের মনে এই আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে, আমরাই বিশ্ব। আজ আমরা সেই আকাঙ্ক্ষার শতবর্ষ উদযাপন করছি,’ তিনি বলেন।

‘বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের শতবর্ষ উদযাপন: ঢাকার একটি ঐতিহ্য’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সমারোহে তিনি এই কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ এবং বোস সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল সায়েন্সেস যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং কলকাতার এসএনবিএনসিবিএস-এর প্রাক্তন অধ্যাপক পার্থ ঘোষও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘১৯২৪ সালে যেভাবে বোসের আবিষ্কারের জন্য পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, আজও সেভাবেই পরিবেশ তৈরি অব্যাহত থাকবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমি বিজ্ঞানের সবাইকে এজন্য আহ্বান জানাই।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তাদের অন্তর্বর্তী সরকার, যা বিপ্লবের ফসল, সকল প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, এই কাজে নিবেদিত সবার কাছ থেকে দাবি-দাওয়া এবং প্রস্তাবনা আসতে হবে।

‘আমরা যদি নিজেদের প্রতি আস্থা রাখি তাহলে আমরা এটা করতে পারব - যেমন বোসের এই আত্মবিশ্বাস ছিল, তাই তিনি একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও আইনস্টাইনের কাছে চিঠি লিখতে পেরেছিলেন,’ অধ্যাপক ইউনূস বলেন।

‘আমাদের মনে সবসময় আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে যাতে আমাদের বিশ্বের কাছে যেতে না হয়, বরং বিশ্ব আমাদের কাছে আসে,’ তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শান্ত ছোট্ট শহর আর সবুজ রমনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, তবে তারা অবশ্যই সেই ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিরিয়ে আনতে পারেন।

‘১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তখনকার ঢাকা বর্তমান ঢাকার চেয়ে বোসের ঢাকার বেশি কাছাকাছি ছিল। তাই আমি তখনকার ঢাকা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কল্পনা করতে পারি,’ তিনি বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বোস-আইনস্টাইন তত্ত্বের শতবর্ষে তারা এই বিষয়টির ওপর জোর দিতে চান যে, আজ বিপ্লবের মাধ্যমে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সমাজ তাদের চিন্তার স্বাধীনতা এবং মুক্ত বুদ্ধিচর্চার অধিকার ফিরে পেয়েছে।

‘এর সঙ্গে এখন বিজ্ঞানের জগতে অবদান রাখার ক্ষমতাও যোগ করতে হবে। আকাঙ্ক্ষাকে উচ্চ রাখার পাশপাশি প্রতিদিনের অধ্যয়ন এবং গবেষণার মাধ্যমেই তা অর্জন সম্ভব,’ তিনি বলেন।