প্রেস সচিব: আদানির আল্টিমেটামে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত

আদানি পাওয়ারকে দ্রুততার সঙ্গে বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার আশাবাদী। একই সঙ্গে সরকার জোর দিয়ে বলেছে, কোন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, তার যতই ক্ষমতা থাকুক না কেন, বাংলাদেশ সরকার কারও কাছে জিম্মি থাকবে না।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম

আদানি পাওয়ার ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে বলে একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে আমরা হতাশ এবং অত্যন্ত মর্মাহত।’

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এখনও এ ধরনের কোনো চিঠি পায়নি, তবে আদানিকে বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে তৎপরতা চলছে।

পূর্ববর্তী সরকারের গাফিলতির জন্য এই বকেয়া পরিশোধের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে দোষারোপ করেন আলম।

তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বকেয়া পরিশোধের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। রিজার্ভ পুনরুদ্ধার হয়েছে। আমরা আশা করছি, আন্তর্জাতিক পরিশোধ করতে পারব।’

সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু না বললে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার।

 এর আগে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ ও ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র (এলসি) প্রদানের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আদানি পাওয়ার

টাইমস অব ইন্ডিয়ার সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বিপিডিবি কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে বকেয়া পরিমাণের জন্য একটি এলসি জারি করার চেষ্টা করলেও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির শর্তাবলীর সঙ্গে তা মেলেনি। ডলার সংকটকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

৩১ অক্টোবর থেকে ঝাড়খণ্ড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেয় আদানি, যা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের (পিজিবি) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১ নভেম্বর আদানির গোড্ডা (ঝাড়খণ্ড) বিদ্যুৎকেন্দ্র ১,৪৯৬ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে মাত্র ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।

বাংলাদেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ সরবরাহকারী হচ্ছে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড। এর পরেই রয়েছে পায়রা (১,২৪৪ মেগাওয়াট), রামপাল (১,২৩৪ মেগাওয়াট) এবং এসএস পাওয়ার-১ (১,২২৪ মেগাওয়াট) বিদ্যুৎকেন্দ্র।