বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়: সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ
- Details
- by ২৪ ডেস্ক
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে রাজস্ব আদায় একটি অপরিহার্য বিষয়। সরকারের সাম্প্রতিক এক মূল্যায়নে উঠে এসেছে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে। তবে এই ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লোগো
সরকারের এক সাম্প্রতিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এই মূল্যায়নে রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা, অর্থাৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে কর-রাজস্বের কীভাবে সাড়া দেয় তার একটি পরিমাপ, বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা হলো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সঙ্গে রাজস্বের প্রতিক্রিয়াশীলতা, যা একটি রাজস্ব ব্যবস্থার কর্মক্ষমতা এবং রাজস্ব বৃদ্ধির পূর্বাভাস মূল্যায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
একের চেয়ে বেশি স্থিতিস্থাপকতা সহগ মানে কর-রাজস্ব জিডিপির চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর একের চেয়ে কম সহগ মানে ধীরগতির বৃদ্ধি।
২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রকৃত জিডিপি এবং প্রকৃত রাজস্ব বৃদ্ধির হার ব্যবহার করে, বিশ্লেষণে দেখা গেছে গড় রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা ০.৯০, যা একের নিচে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথি অনুসারে, এই কম স্কোর বাংলাদেশে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুযোগের ইঙ্গিত দেয়।
সরকারি মূল্যায়নে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে কার্যকর করের হার রাজস্ব কর্মক্ষমতার আরেকটি পরিমাপ হিসেবে কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রকৃত খাতের ভ্যাটের কার্যকর হার ভোক্তা তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে নির্ণয় করা যেতে পারে।
একটি বিশ্লেষণ দেখায় যে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কার্যকর ভ্যাটের হার বেড়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭.১ শতাংশে পৌঁছেছে। যাইহোক, এটি বাংলাদেশে বেশিরভাগ পণ্যের জন্য প্রযোজ্য ১৫ শতাংশ ভ্যাটের হারের চেয়ে অনেক কম।
তুলনীয় অর্থনীতির দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় এখনও পিছিয়ে।
২০২২ সালে, নেপালে সরকারি রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ছিল ২৩.১ শতাংশ, ভারতে ১৯.৮ শতাংশ এবং লাওসে ১৪.৮ শতাংশ, আর বাংলাদেশে মাত্র ৮.৯ শতাংশ।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রাজস্ব আদায়ের মধ্যে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক বিদ্যমান, এ ব্যাপারে সর্বজনস্বীকৃতি রয়েছে।
দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য, অর্থ মন্ত্রণালয় কর প্রশাসন ব্যবস্থার কার্যকারিতা, দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা বৃদ্ধির জন্য বড় ধরনের সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
এই নথিতে কর-ছাড় পুনর্বিবেচনা করার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে যাতে এই সুবিধাগুলো বৃহত্তর অর্থনীতিকে সমর্থন করে এবং নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর ব্যয়ে ধনী ব্যক্তিদের অসমভাবে সুবিধা না দেয়, যা রাজস্ব নীতির পুনর্বণ্টনমূলক লক্ষ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কর রিটার্ন জমাদানের ক্ষেত্রেও উন্নতির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে; ২০২১-২২ অর্থবছরে, মাত্র ৩৩.৩ শতাংশ টিআইএন ধারক কর রিটার্ন দাখিল করেছেন, যা অনুরূপ দেশগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে কম।
অর্থ মন্ত্রণালয় রাজস্ব আদায় জোরদার করার জন্য বেশ কয়েকটি আধুনিক সংস্কার কৌশলের রূপরেখা দিয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে করের আওতা বাড়ানো, একটি আধুনিক সম্পত্তি কর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, পরিবেশবান্ধব এবং কার্বন কর চালু করা, কর আদায় সহজীকরণ করা, কর দাখিল এবং অর্থপ্রদান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয় করা এবং কর আদায়কারী ও করদাতাদের মধ্যে সরাসরি মিথস্ক্রিয়া কমিয়ে আনা।
অন্যান্য কৌশলের মধ্যে রয়েছে অডিটকে আরও নির্বাচনী, উৎপাদনশীল এবং মানদণ্ড-ভিত্তিক করা, সেইসঙ্গে কর নীতি নির্ধারণ এবং কর আদায় পৃথক করা।
মোট রাজস্বে আয়কর এবং ভ্যাটের অংশ বৃদ্ধি পেয়ে সরকার এ দিকে অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তবে, পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং সরাসরি করের ওপর আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে মোট রাজস্বে সরাসরি করের প্রকৃত অংশ ছিল ৩২.৩ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে সামান্য বেড়ে ৩২.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
রাজস্ব বৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য, সরকার আগামী বছরগুলোতে করের আওতা বাড়ানোর, বাণিজ্য কর থেকে সরাসরি করের ওপর নির্ভরতা স্থানান্তর করার এবং সরাসরি করের প্রৃদ্ধি আরও তুলনামূলকভাবে দ্রুততর করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
ইউএনবি অবলম্বনে
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.