উপদেষ্টা নাহিদ: সাংবাদিকতায় নতুন যুগ চায় জনগণ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশে সাংবাদিকতায় নতুন ধারার প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশের মানুষ। তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে সরকার গণমাধ্যমের পরিবেশ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। গণমাধ্যম বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে কাজ করবে এবং সর্বদা দেশ ও জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে।’

নাহিদ ইসলাম

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের (প্রথম পর্যায়) কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ।

উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহত সাংবাদিকদের পরিবারকে সহায়তা করতে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘এই সংগ্রামে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের অবদান সরকার স্মরণ করবে এবং সম্মান করবে,’ তিনি আরও বলেন।

সরকারের দায়িত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় মৃত সাংবাদিকদের পরিবারকে তার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের পাশে আছে।

তিনি জানান, সাংবাদিকদের কল্যাণে ট্রাস্ট সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ে ৩৫০ জনকে কল্যাণ অনুদানের চেক দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও সাংবাদিকদের অনুদান দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে, এমনকি গণমাধ্যমেও ফ্যাসিবাদ ঢুকে পড়েছিল। সরকারের অনুগত করার জন্য গণমাধ্যমের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল। যেসব গণমাধ্যম প্রতিরোধ করেছিল তাদের উপর নানাভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে।

উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তাদের দেশ ও জনগণের জন্য লিখতে ও কথা বলতে হবে। জনগণ সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমের প্রত্যাশা করে, কিন্তু গত ১৬ বছরে গণমাধ্যম সেই ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের সাথে যুক্ত সাংবাদিকরা প্রকৃত সাংবাদিকতার প্রতিনিধিত্ব করে না, কারণ তারা দুর্নীতির জন্য গণমাধ্যমকে ব্যবহার করেছে। আসলে যারা পূর্ববর্তী সরকারের সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারাই গণমাধ্যমের প্রকৃত প্রতিনিধি।

সাংবাদিকদের হয়রানি থেকে রক্ষা করার বিষয়ে উপদেষ্টা ঘোষণা করেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানির ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে, যা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। সাংবাদিকরা এই কমিটিতে হয়রানির ঘটনা জানাতে পারবেন এবং মন্ত্রণালয় তাদের সহায়তা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।