ড্রোন বিপ্লবে তুরস্ক: এককালের ‘রুগ্ন’ এখন বিশ্বসেরা

একসময় ইসরায়েলের কাছে ড্রোন কিনতে গিয়ে অপমানিত হওয়া তুরস্ক আজ বিশ্বের শীর্ষ ড্রোন উৎপাদনকারী দেশ। নিজেদের তৈরি অত্যাধুনিক ড্রোন দিয়ে বিশ্ববাজারের ৬৫ শতাংশ দখল করে রতারা পেছনে ফেলে দিয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রযুক্তি-সিদ্ধহস্ত দেশগুলোকে।

তুরস্কে নির্মিত একটি ড্রোন

এককালের অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল তুরস্ককে ‘রুগ্ন’ বলে উপেক্ষা করেছে বিশ্বের অনেক শক্তিধর রাষ্ট্র। কিন্তু ২১ শতকে এসে ড্রোন প্রযুক্তিতে অভাবনীয় সাফল্যের মধ্য দিয়ে তুরস্ক আবারও বিশ্বের দরবারে নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে।

ইসরায়েল থেকে ড্রোন কিনতে গিয়ে দুঃখজনক পরিস্থিতির শিকার হয়েছিল তুরস্ক। চুক্তির শেষ মুহূর্তে ইসরায়েল শর্ত রাখে, তুরস্কের কেনা ড্রোন পরিচালনা করবে তাদের সেনারাই। এই শর্ত মেনে না নিয়ে তুরস্ক নিজের প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে ড্রোন তৈরির কাজ শুরু করে। এরই ফলশ্রুতিতে আজ তুরস্ক বিশ্বের শীর্ষ ড্রোন উৎপাদক।

তুরস্কের এই উত্থানের মূলে রয়েছে তাদের নির্মিত ‘বায়রাক্টার টিবি-২’ মডেলের ড্রোন। কুর্দি বিদ্রোহ থেকে শুরু করে নাগোরনো-কারাবাখ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এমনকি লিবিয়ার সংঘাতেও এই ড্রোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। এরপর থেকে এই ড্রোনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়।

মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর আ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি (সিএনএএস) -এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে বর্তমানে তুরস্কের তৈরি ড্রোনের বাজার প্রায় ৬৫ শতাংশ দখলে। চীনের দখলে ২৬ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ৮ শতাংশ।

সাশ্রয়ী মূল্য, সহজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবহার সুবিধার কারণে এই ড্রোন বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটোভুক্ত দেশ সহ এশিয়ার অনেক দেশ এই ড্রোন কিনছে। দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তানও ইতোমধ্যে এই ড্রোন সংগ্রহ করেছে।