সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী: অনুমতি পেলেন বিএনপি মহাসচিব

সংবিধানের বহুল বিতর্কিত ১৫তম সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে দায়ের করা রিট মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পক্ষভুক্ত হওয়ার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

আজ বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ প্রদান করেন। ফলে, তিনি তার আইনজীবীর মাধ্যমে ১৫তম সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে তোলা রুলের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারবেন।

আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করে বলেন, তার মক্কেল এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে ইচ্ছুক।

উল্লেখ্য, আগামীকাল বুধবার এই বেঞ্চ সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে তোলা রুলের ওপর শুনানি করার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০‍১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে ১৫তম সংশোধনী বিলটি পাস হয় এবং একই বছরের ৩ জুলাই তা আইনে পরিণত হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে ১৩তম সংশোধনী দ্বারা প্রবর্তিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়। এছাড়াও, এই আইনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়।

এই সংশোধনীর পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি - তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে ১৩তম সংশোধনী বাতিলের বিষয়টি তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে, চলতি বছরের ১৯ আগস্ট বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ (যিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন) রুল জারি করেন। এই রুলে সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধনী) আইন, ২০১১ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং এই আইনের অধীনে গৃহীত পূর্ববর্তী পদক্ষেপগুলিকে কেন বৈধ বলে গণ্য করা হবে না - তা জানতে চাওয়া হয়।

এই রুলের জবাবে ১০ দিনের মধ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়কে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

১৫তম সংশোধনীর বৈধতা এবং সংবিধানসম্মততা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করা হয়।

গত ১৮ আগস্ট পাঁচজন সচেতন নাগরিক - সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, মো. জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং জাহরা রহমান - জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি দায়ের করেন।