শিল্পে ফিরছে গ্যাস সংযোগ, গৃহস্থালিতে নয়
- Details
- by ২৪ ডেস্ক
শিল্প-কারখানায় গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করে উৎপাদন চাকা সচল রাখতে শিল্প কারখানায় নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। তবে, সরকারি সূত্র জানিয়েছে যে, নতুন করে গৃহস্থালি গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। খবর ইউএনবি।
সরকারি তথ্য অনুসারে, দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছে বর্তমানে প্রায় ৪৬ হাজার গৃহস্থালি গ্যাস সংযোগের আবেদন ঝুলে আছে। তিতাস গ্যাস রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
এর বিপরীতে, শিল্প কারখানা এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে গ্যাস সংযোগের জন্য ৩৬৮টি আবেদন জমা পড়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে গৃহস্থালি গ্রাহকদের নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধ করে দেয় সরকার। ২০১৩ সালে অল্প সময়ের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও ২০১৪ সালের শুরুতে তা পুনরায় জারি করা হয়।
তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরপর থেকে নতুন কোনো গৃহস্থালি গ্রাহককে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
তারা আরও জানান, ২০২০ সালে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্প পার্কের বাইরে শিল্প কারখানায় নতুন করে গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধের জন্য একটি সার্কুলার জারি করে। এই নির্দেশনা ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে কার্যকর করা হয়।
নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, `শিল্প কারখানায় নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার বিষয়টি আমরা ভাবছি।'
সম্প্রতি জ্বালানি সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, `এ বিষয়ে আমরা আমাদের ইতিবাচক মতামত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে জানিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।'
জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে সবসময়ই গ্যাস সংযোগ প্রদানে শিল্প কারখানাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
তবে, গৃহস্থালি পর্যায়ে নতুন করে গ্যাস সংযোগ প্রদানের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণরূপে মন্ত্রণালয়ের বিষয় এবং এখন পর্যন্ত এ ধরনের সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
জ্বালানি উপদেষ্টার সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, সরকার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে, নিকট ভবিষ্যতে নতুন করে কোনো গৃহস্থালি গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না।
পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন ও মাইনস) এম ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, বর্তমানে গ্যাস সরবরাহ এবং চাহিদার মধ্যে বিরাট বৈষম্য রয়েছে যা নতুন করে গ্যাস সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা।
তিনি জানান, পেট্রোবাংলা প্রতিদিন প্রায় ৪০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৩১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ করে।
তিতাস এবং অন্যান্য গ্যাস বিতরণ কোম্পানির অনেক কর্মকর্তা জানান, সরকার পাইপ লাইনের বাইরে গ্যাস সরবরাহ, বিশেষ করে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। এ খাতে ইতিমধ্যে কিছু ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে।
একজন তিতাস কর্মকর্তা বলেন, নগর এলাকা থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে এলপিজির বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে এবং রান্নার কাজে পরিষ্কার জ্বালানি হিসেবে এ ধরনের গ্যাস ব্যবহারে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। তিনি আরও জানান, এই বাজারে সরকার হস্তক্ষেপ করতে চায় না।
শিল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলপিজি আমদানি করা হচ্ছে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এলপিজির বাজার বেড়ে ৩.০ মিলিয়ন মেট্রিক টনে পৌঁছাবে।
এলপিজি ব্যবসা পরিচালনার জন্য সরকার এ পর্যন্ত ৫৮টি কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৮টি কোম্পানি কার্যকর আছে। ২০২২ সালে, সরকার এই খাত থেকে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) হিসেবে ৬৫০ কোটি টাকা এবং আয়কর হিসেবে ২০০ কোটি টাকা পেয়েছে।
পেট্রোবাংলার আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘সব দিক বিবেচনা করে, সরকার পাইপ লাইনের মাধ্যমে নতুন করে গ্যাস সংযোগ প্রদান শুরু করতে চাইছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে গৃহস্থালি গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু করলে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।’
নতুন সংযোগ দেওয়ার পরিবর্তে, সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে বেআইনি গ্যাস সংযোগ রোধ করতে চায়। বর্তমানে বাংলাদেশে ২৯টি গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২২টি সক্রিয় রয়েছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.