এল ক্লাসিকো: রিয়ালকে উড়িয়ে দিলো বার্সা

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই গোল পিছিয়ে থেকেও ৫-২ ব্যবধানে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করা দলটা এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনার বিপক্ষেও দুই গোলে পিছিয়ে পড়ল। কিন্তু এবার আর প্রত্যাবর্তন হলো না।

এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদকে তাদেরই মাঠে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। ছবি: :এক্স

বরং সম্ভ্রম নিয়েই টানাটানি লাগল। নিজেদের মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সার কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হলো রিয়াল। এই হারে স্প্যানিশ লা লিগায় টানা ৪২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারের স্বাদ পেল রিয়াল। চিরশত্রুদের উড়িয়ে লিগে নিজেদের ৪৩ ম্যাচ অজেয় থাকার পুরোনো রেকর্ডটা টিকিয়ে রাখল বার্সা।

দাপুটে এই জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষস্থানও সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেল বার্সেলোনা। ১১ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। সমান ম্যাচে তাদের চেয়ে ছয় পয়েন্ট পিছিয়ে দুইয়ে থাকল রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের পেছনে আছে যথাক্রমে ভিয়ারিয়াল (২১) ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ (২০)।

এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে চার গোল করল বার্সেলোনা। গত বুধবার বায়ার্ন মিউনিখকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। এবার সেই ছন্দ এল ক্লাসিকোতেও বয়ে আনল হান্সি ফ্লিকের দল। রিয়ালের মাঠ বার্নাব্যুতে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ অবধি একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছে তারা।

শুধু গোলটা পেতেই যা একটু অপেক্ষা করতে হয়েছে। অপেক্ষা শেষ হয় ৫৪ মিনিটে; গোলমুখ খোলেন রবার্ট লেভানডফস্কি। এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের গোল। ৫৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বার্সেলোনার পোলিশ স্ট্রাইকার। এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটা লেভার ১৭তম গোল।

হ্যাটট্রিকেরও সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল বার্সার অভিজ্ঞ স্ট্রাইকারের। কিন্তু হাতছাড়া করেছেন লেভা। রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিনকে প্রায় একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। পোলিশ স্ট্রাইকারের শট ফিরে আসে রিয়ালের পোস্টে লেগে। এর ঠিক আগ মুহূর্তে বাতিল হয় রিয়ালের গোল।

দুই গোল হজম করা রিয়াল আর ফিরতে পারেনি। লড়াইয়ে ফেরার তাড়না তাদের শারীরী ভাষাতে দেখা গেলেও ছিল না আগের ম্যাচের গতি ও ছন্দ। এ জন্য দুর্ভাগ্যকেও চাইলে দায়ী করতে পারে রিয়াল। ব্যবধান কমানোর সুযোগ এসেছিল কয়েকটা। এর মধ্যে একবার বার্সার জালের নাগালও পেয়েছিল তারা।

কিন্তু কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলটা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। পুরো ম্যাচে কেবল তিনি একাই আটবার অফসাইড হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ৩০ মিনিটেই ছয়বার! পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে নির্দিষ্ট কোনো ম্যাচে এতোবার অফসাইড আর হননি এমবাপ্পে। ম্যাচজুড়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন তিনি। সঙ্গে অন্যরাও। রিয়াল এরপর হজম করল আরও দুই গোল।

৭৭ মিনিটে স্কোর লাইন ৩-০ করেন লেমিন ইয়ামাল। তাতে হলো আরেক ইতিহাস। সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে এল ক্লাসিকোতে গোল করলেন ইয়ামাল (১৭ বছর ১০৬ দিন)। তার গোলের উৎস রাফিনহা। একটু পর ব্রাজিলিয়ান তারকা নিজেই খুঁজে নেন জালের ঠিকানা। ৮৪ মিনিটে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা রাফিনহা।

এল ক্লাসিকোর আগে দারুণ ছন্দে ছিলেন দুই ব্রাজিলিয়ান ফরওয়ার্ড ভিনিচিয়াস জুনিয়র ও রাফিনহা। রিয়াল-বার্সা মহারণ এই দুজনের জন্য ছিল আলাদা দ্বৈরথের। যেখানে নিষ্প্রভ থাকলেন ব্যালন ডি’অরের সুবাস পাওয়া ভিনি। আর জ্বলে উঠলেন রাফিনহা। কেবল এই মাসেই ১০ গোল করলেন তিনি। সঙ্গে আটটি অ্যাসিস্ট।