হঠাৎ ফেসবুক লাইভে জাহাঙ্গীর কবির নানক

আড়াই মাস আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ করেই লাইভ ভিডিওবার্তায় সরব হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। সেখানে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো অধিকার নেই। এ সময় তিনি ‘আওয়ামী লীগ কখনও কাউকে মারেনি, নিপীড়ন করেনি’ বলেও দাবি করেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পরদিন বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। এতে তিনি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশে এখন ফ্যাসিস্ট শাসন চালু হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সংবিধান অনুযায়ী সশরীরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে লিখিত পদত্যাগপত্র প্রদান করেননি। এর অর্থ হচ্ছে তিনি এখনও বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। ফলে মুহাম্মদ ইউনূসের এই অন্তর্বর্তী সরকার অবৈধ। আর সে কারণেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার অধিকার তাদের নেই।

বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ছাত্রলীগের ইতিহাস ওতপ্রোতোভাবে জড়িত উল্লেখ করে তিনি আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ কখনও কাউকে মারেনি, নিপীড়ন করেনি। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ওপর হত্যার দায় চাপিয়ে জনগণকে ভুল বোঝানো হয়েছে। সব হত্যার দায় এই অন্তর্বর্তী সরকার ও সমন্বয়কদের।

বাংলাদেশে এখন ফ্যাসিস্ট শাসন চালু হয়েছে অভিযোগ করে নানক বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়ার দিকে এগোচ্ছে।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের অভিভাবক। তাকে নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা আসলে দুর্ভাগ্যজনক। রাষ্ট্রপতির প্রতি যে অসম্মান দেখানো হচ্ছে, এটি একটি ভয়াবহ প্রবণতা।

প্রায় এগারো মিনিটের ফেসবুক লাইভে নানক সমন্বয়কদের ব্যাপারেও কথা বলেন। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ‘কিশোর গ্যাং’ থেকে এসেছেন। হিজবুত তাহরীর, জামায়াত-শিবিরসহ জঙ্গিরা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়ে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল।

তিনি আরও মন্তব্য করেন, মাস্টারমাইন্ডের এসব ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য ছিল এই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে মুছে ফেলা। গত আড়াই মাসে এটিই প্রমাণিত হয়েছে। ইউনূসের সরকার নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে, তিন হাজারের অধিক পুলিশ হত্যার আসামিদের ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য আরও বলেন, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করে গণহত্যার দায় এড়াতে দায়ীদের ইনডেমনিটি দিচ্ছে, যা তাদের অপরাধের সরাসরি প্রমাণ। তিনি প্রশ্ন করেন, হত্যা যদি তারা না-ই করে থাকে, তাহলে ইনডেমনিটি দিতে হবে কেন?