প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং: জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ৪৪ পুলিশ সদস্য নিহত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয় শুক্রবার জানিয়েছে যে, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানে ৪৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের লোগো

নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন কনস্টেবল, ১ জন নায়েক, ৭ জন এএসআই, ১ জন অতিরিক্ত এসআই, ১১ জন এসআই এবং ৩ জন পুলিশ পরিদর্শক।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে কিছু সংবাদমাধ্যম এবং কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানে নিহত পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে যে, এটি হলো আন্দোলনের সময় নিহত পুলিশ সদস্যদের আসল তালিকা এবং তালিকাটি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।

তাতে আরও বলা হয়, যে কোনো বিক্ষোভ বা সহিংসতার ঘটনায় আহত বা নিহত পুলিশ কর্মকর্তা বা কনস্টেবলদের তালিকা পুলিশ বিভাগ সযত্নে সংরক্ষণ করে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ‘যারা এই আন্দোলনে আরও বেশি পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার দাবি করছেন তাদের প্রমাণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’

৫ আগস্ট ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের আড়াই মাস পর অন্তর্বর্তী সরকার নিহত পুলিশ সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করে।

১৮ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তরও একই তালিকা গণমাধ্যমের সঙ্গে শেয়ার করে।

নিহত পুলিশ পরিদর্শকরা হলেন মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়া, আব্দুর রাজ্জাক এবং রাশেদুল ইসলাম।

নিহত উপ-পরিদর্শকরা হলেন বশির উদ্দিন, রইস উদ্দিন খান, তোহসেনুজ্জামান, প্রণবেশ কুমার বিশ্বাস, নাজমুল হোসেন, আনিসুর রহমান মোল্লা, সন্তোষ চৌধুরী, সুজন চন্দ্র দে, খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার, রেজাউল করিম এবং মামুনুর রশিদ সরকার।

নিহত সহকারী উপ-পরিদর্শকরা হলেন সঞ্জয় কুমার দাস, ফিরোজ হোসেন, সোহেল রানা, রাজু আহমেদ, ওবায়দুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, মো. মুক্তাদির এবং আলী হোসেন চৌধুরী।

নিহত নায়েকের নাম গিয়াস উদ্দিন।

নিহত কনস্টেবলরা হলেন মাইনুদ্দিন লিটন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, আব্দুস সালেক, হাফিজুল ইসলাম, রবিউল আলম শাহ, হুমায়ুন কবির, আরিফুল আজম, রিয়াজুল ইসলাম, শাহীন উদ্দিন, হানিফ আলী, এরশাদ আলী, সুজন মিয়া, খলিলুর রহমান, আব্দুল মজিদ, রেজাউল করিম, মাহফুজুর রহমান, শহিদুল আলম, আবু হাসনাত রনি, মীর মনতাজ আলী, সুমন কুমার ঘোষ এবং আব্দুল মালেক।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনারের কার্যালয় ১৬ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলেছে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র বিক্ষোভে প্রায় ৬৫০ জন নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটির মতে, ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়, যেখানে ৫-৬ আগস্ট নতুন করে শুরু হওয়া বিক্ষোভে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়।