ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে মিছিল

আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে নিষিদ্ধের প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সংগঠনটির জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের মিয়াপাড়ায় এ মিছিল করা হয়।

গোপালগঞ্জ সদর থানা

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ২০-২৫ জনের একটি দল মিয়াপাড়ায় জড়ো হয়ে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করে। একপর্যায়ে মিছিলটি সাহাপাড়া এলাকার ডা. অসিত কুমার মল্লিকের বাড়ির সামনে পৌঁছালে পুলিশের একটি টহল গাড়ি দেখতে পেয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা।

এসময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪ জনকে আটক করে। আটককৃতদেরকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় রাখা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শহরের মিয়াপাড়া এলাকায় কয়েকজন মিলে একটি মিছিল বের করে। পরে সদর থানার টহল পুলিশের গাড়ি দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, বুধবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়াভাবে সশস্ত্র আক্রমণ করে শত শত মানুষকে হত্যা করেছেন এবং অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছেন। এ ছাড়া গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।

প্রজ্ঞাপনের শেষাংশে বলা হয়, এসব কারণে সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং আইনের তফসিল-২-এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামের সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল।