রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়ম: তদন্ত কমিটি গঠন হাইকোর্টের

রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসিম উদ্দিন সরকার এবং প্রকৌশলী আলমগীর হাসান।

হাইকোর্টের ছবি

আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য এবং অন্যান্যদের পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করবে এই কমিটি।

বিচারপতি ফাতেমা নাজিব ও বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজির বেঞ্চ আইনজীবী রেজাউল ইসলাম ও আরও নয়জন আইনজীবীর করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

আদালত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ১২০ দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ছয় সদস্যকে পৃথকভাবে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এই রিট দায়ের করা হয়েছিল।

অন্যদিকে, বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তেজগাঁওয়ে শিল্প প্লট বরাদ্দ নিয়ে আরেকটি মামলার রায় দেন।

বিএনপি’র শাসনামলে তেজগাঁওয়ে যারা শিল্প প্লট পেয়েছিলেন, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী শিল্প কারখানা স্থাপন করেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্লটধারীদের দুই মাসের মধ্যে শর্ত পূরণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।

‘রাতারাতি সড়ক প্রকল্প পরিণত হলো শিল্প প্লটে’ শিরোনামে ২০১০ সালে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৯ মে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। আদালত আজ সেই রুলের কার্যক্রম শেষ ঘোষণা করেন।

মানবাধিকার ও শান্তির জন্য বাংলাদেশ (আশরাফুল আলম রামান) নামের একটি সংগঠন স্বতঃপ্রণোদিত রুলে অংশগ্রহণ করে।

আদালতে জানানো হয়, সেই সময় ২৪ জন ব্যক্তি শিল্প প্লট পেয়েছিলেন। এর মধ্যে কয়েকটি গণমাধ্যমও ছিল।

আদালত বলেছেন, প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। শুধু একটি কমিটি রয়েছে যারা প্লট বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।

আদালত আরও বলেন, প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা অপরিহার্য। বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে খোলা আবেদনের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ দিতে হবে।

ভবিষ্যতে শিল্প প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটি আনুষ্ঠানিক নির্দেশিকা প্রণয়নের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

‘যেহেতু এই সম্পত্তি জনগণের, তাই এখানে একটি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ নীতিমালা থাকা অত্যন্ত জরুরি’ বলে মন্তব্য করেন আদালত।