রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ: সংকট চায় না জাতি, বলল বিএনপি

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বুধবার বলেছেন, জাতি এমন কোনো পদক্ষেণ চায় না যা থেকে সংবিধানিক বা রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান যাতে স্বৈরাচারীদের দোসররা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে।

‘রাষ্ট্রপতির পদটি সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ এবং এটি একটি প্রতিষ্ঠানও। পদত্যাগ বা অপসারণের মাধ্যমে যদি এই পদ শূন্য হয়, তাহলে তা সংবিধানিক ও জাতীয় সংকট তৈরি করবে,’ তিনি বলেন।

এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, গণতন্ত্রে রূপান্তরের পথ যদি কোনো রাষ্ট্রীয় সংকটের মাধ্যমে বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে তা জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী হবে।

তিনি সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান যাতে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী ও তাদের সহযোগীরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে।

এই বিএনপি নেতা আরও জোর দিয়ে বলেন, জাতি ঐক্যবদ্ধ এবং এই ধরনের যে কোনো চ্যালেঞ্জ এবং ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত।

বিএনপি কি রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ চায় এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই মুহুর্তে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে একটি রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে, যা জাতি আশা করে না।’

উল্লেখ্য, ‘জনতার চোখ’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী দাবি করেছিলেন যে রাষ্ট্রপতি তাকে বলেছেন যে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র পাননি। এরপর থেকেই একদল শিক্ষার্থী এবং জনগণ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের দাবি জানাচ্ছে।

পরবর্তীতে, আইন বিশেষজ্ঞ ড. আসিফ নজরুল হাসিনার পদত্যাগপত্র না পাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির মিথ্যা বলায় অভিযুক্ত করে বলেন যে, তার এই বক্তব্য তার শপথ ভঙ্গের শামিল। ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তিনি পাননি বলে রাষ্ট্রপতির দাবি মিথ্যা এবং তার শপথের লঙ্ঘন,’ ড. আসিফ জোর দিয়ে বলেন।

এর আগে দিনের শুরুতে, সালাহউদ্দিনসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং যে কোনো সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরির প্রয়াস ব্যর্থ করার জন্য জাতীয় ঐক্য জোরদারের আহ্বান জানান।

সাক্ষাতের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসনের দোসরদের যেকোনো ষড়যন্ত্র সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে।

নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ এবং সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বিএনপি নেতা বলেন, সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।

রাষ্ট্রপতি অপসারণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কি তাদের কাছ থেকে কোন মতামত চেয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যান।

তবে, দেশে যাতে নতুন করে কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।