শরণার্থী শিবির থেকে বিমানের ককপিট: সিরীয় এক তরুণীর অদম্য যাত্রা!

সিরিয়া থেকে ২০১৫ সালে শরণার্থী হিসেবে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন মায়া গজল। হাজারো শরণার্থীর মতো ভাসমান জীবনযাপন না করে ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছা ছিল তার। অবশেষে সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। বিমানের ককপিটে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

বিমানের ককপিটে মায়া গজল

মায়া গজলের জন্ম সিরিয়ায়। শৈশব কেটেছে দামেস্কে। কিন্তু গৃহযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারসহ দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। আশ্রয় নেন যুক্তরাজ্যে। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর।

যুক্তরাজ্যে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়া তার জন্য সহজ ছিল না। ভাষা ও সংস্কৃতির ভিন্নতা, শরণার্থীদের প্রতি বৈষম্য তার পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মায়া দমে যাননি। ইংরেজি দক্ষতা উন্নত করে পড়াশোনায় মনোযোগী হন। একসময় পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

একজন শরণার্থীর পক্ষে এটা অনেকটা আকাশকুসুম কল্পনা ছিল। তবুও হাল ছাড়েননি মায়া। লন্ডনের ব্রুনেল ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেন। ২০১৯ সালে প্রথম সিরিয়ান শরণার্থী হিসেবে পাইলটের লাইসেন্স পান। এখন বাণিজ্যিক বিমান চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।

মায়া শুধু নিজের ক্যারিয়ার নিয়েই ব্যস্ত নন। শরণার্থীদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশনসহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন।

মায়ার গল্প বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি হয়ে উঠেছেন দুর্দমনীয় সংকল্পের প্রতীক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে শরণার্থীদের উজ্জীবিত করেন। তার মতে, সুযোগ পেলে এবং সেটা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে শরণার্থীরাও অসাধ্য সাধন করতে পারে। ২০২১ সালে তিনি ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।