আসিফ নজরুল: বিচারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগের সম্মুখীন হাইকোর্টের একাধিক বিচারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে পুনর্বহাল করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। তিনি রোববার (২০ অক্টোবর) সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা বলেন।

আসিফ নজরুল

আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে পুনর্বহাল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন উদ্বেগজনক খবর প্রকাশ পেয়েছে। এই কাউন্সিল জনসাধারণকে বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সমাধান করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। 

তিনি বলেন, এই কাউন্সিল এখন কার্যকর করা যেতে পারে। এই সময়ে এটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ হাইকোর্টের কয়েকজন বিচারকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।    

তিনি আরও বলেন, তারা জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহের সময় ফ্যাসিবাদী শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। এর ফলে ছাত্রজনতার মধ্যে বিশেষ ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

আইন উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, কাউন্সিলের পুনরুজ্জীবন এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক পথ খুলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকে এবং প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। আমরা কাউন্সিলের পুনরুজ্জীবনকে একটি ইতিবাচক উন্নয়ন হিসাবে দেখছি, যা ছাত্র ও জনসাধারণকে তাদের উদ্বেগগুলো পেশ করার জন্য একটি বৈধ ফোরাম প্রদান করে।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কবে কার্যকর হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী এটি ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে। 

আইন উপদেষ্টা যোগ করেন, প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের দুই জ্যেষ্ঠ বিচারকের সমন্বয়ে এই কাউন্সিল গঠিত হয়েছে। যদি কেউ এখন একজন বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেয়, তবে অতিরিক্ত কোনো বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন ছাড়াই প্রক্রিয়াটি অবিলম্বে শুরু হবে। 

তিনি এই কাউন্সিল বাতিলের সমালোচনা করেন। এরপর উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কোনো ফোরাম ছিল না। তিনি বলেন, ‘সে সময় বিচার বিভাগীয় প্রশাসনের মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কোনো ইচ্ছা ছিল না। তখন ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছিল। আপনারা জানেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কী রকম রায় হয়েছে! তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেয়া হয়নি! বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ করার মতো রায়ও হয়েছে।   

আসিফ নজরুল যোগ করেন, বহু মানুষ তাদের মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ পাননি। তারা বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বর্তমান কর্তৃপক্ষের আদালতের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সদিচ্ছা রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। ফলে সেটা বাস্তবায়ন করার ফোরামও পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। আমি এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।