আসিফ নজরুল: সাকিবের প্রতি ক্ষোভ অযৌক্তিক নয়

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানকে ঘিরে চলমান বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, সাকিবের প্রতি জনগণের ক্ষোভ অযৌক্তিক নয়।

আসিফ নজরুল ও সাকিব আল হাসান

সাকিব আল হাসান আসন্ন বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার কথা ছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এই টেস্টই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।

তবে, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে ভূমিকা রাখার কারণে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের মুখে পড়েন এই তারকা ক্রিকেটার। ফলে দেশে ফেরার পরিকল্পনা স্থগিত করতে বাধ্য হন তিনি।

একদল বিক্ষোভকারী, যাদের অধিকাংশই ছাত্র, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) চিঠি দিয়ে সাকিবকে দেশের মাটিতে খেলানো থেকে বিরত রাখার জন্য সতর্ক করে। অন্যদিকে, শুক্রবার সাকিবের সমর্থকরাও তার পক্ষে স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নামে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের একটি অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সাকিবের মতো খেলোয়াড় আর হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সে হতে পারত বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষ। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তা সম্ভব হয়নি।’

আসিফ নজরুল ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, বিগত সরকারের সাথে জড়িত থাকার কারণে সাকিবের একসময়ের যে জনপ্রিয়তা ছিল তা ধরে রাখা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

সাকিবের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের প্রসঙ্গ টেনে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না… যখন মানুষ মারা যাচ্ছিল, চারদিকে কান্না, ক্ষোভ আর যন্ত্রণা, তখন সে পোস্ট করল যে সে 'জীবন উপভোগ করছে'—কোথায় যেন! এটা কি করে সম্ভব একজন মানুষের পক্ষে?” উল্লেখ্য, আন্দোলনের সময় সাকিব টরন্টোতে তার সুখী জীবনের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এরপর জুয়া, অশোভন আচরণ… কখনও কখনও মনে হয় মানুষ বলবে আমি অনেক কথা বলছি, কিন্তু আমি মনে করি শেখ হাসিনাও এর জন্য দায়ী। তিনি এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন যেখানে যেকোনো কিছু ক্ষমা করা যেতে পারে, যে কেউ ক্ষমা পেতে পারে যদি সে তার প্রতি অনুগত থাকে। এটা যে কাউকে বিভ্রান্ত করতে পারে, যা হয়তো সাকিবের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। আমি তার জন্য খারাপ বোধ করি, কিন্তু তার প্রতি ক্ষোভকে আমি অযৌক্তিক মনে করি না।’

সম্প্রতি ভারত সফরের সময় কানপুর টেস্টের আগে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। তিনি জানিয়েছিলেন, নিজ দেশের মাটিতেই শেষ টেস্ট খেলতে চান। তবে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় এবং আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য দেশে তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা সরকার এই আন্দোলনকে নৃশংসভাবে দমন করার চেষ্টা করেছিল। সে সরকারের একজন আইনপ্রণেতা ছিলেন সাকিব।