ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: শেখ হাসিনা এখনও ভারতে আছেন

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তার কারণে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনও সেখানেই অবস্থান করছেন। ১৭ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শেখ হাসিনা

বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আগেই উল্লেখ করেছিলাম যে নিরাপত্তার কারণে তিনি স্বল্প সময়ের নোটিশে ভারতে এসেছিলেন এবং তিনি এখানেই রয়েছেন।'  

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভের সময় গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার কয়েক ঘণ্টা পরে এই মন্তব্য করেন জয়সওয়াল। 

তিনি আইসিটির জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। 

সাম্প্রতিক দূর্গা পূজা উদযাপনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা দেখেছি হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অনেক সহিংসতা হয়েছে। পূজা মন্ডপেও সহিংসতা হয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য যে আশ্বাস দিয়েছে – সেগুলো অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে মানুষ নিরাপদ বোধ করতে পারে।'   

৫ আগস্ট ছাত্রজনতার নেতৃত্বে দেশব্যাপী গণবিক্ষোভের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীসহ ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।   

শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ দিন পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এরপর হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য কয়েকজন উপদেষ্টা ভারতের কাছে দাবি করেছিলেন। এটি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি অস্বস্তিকর বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।  

এদিকে বৃহস্পতিবার আইসিটির কার্যক্রমের পর প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তের স্বার্থে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে এই আদালতে হাজির করার কথা বলা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাসিনা ও তার দলের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র:হিন্দুস্তান টাইমস