প্রায় এক বছর আগে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ১৭.৫ লাখ স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের লক্ষ্যে দুটি পৃথক ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে তিতাস গ্যাস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাতে পারেনি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।

titas smart prepaid meterছবি - সংগৃহীত

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তিতাস গ্যাস কেবল কয়েকজন ব্যক্তিগত পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক (পিএমসি) নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে পিএমসির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ এটি পরিকল্পনা ও নকশা তৈরির দায়িত্ব পালন করে।’

‘প্রধান প্রযুক্তিগত দিকগুলো পিএমসির হাতে থাকে। সাধারণত এক বা দুটি বিদেশি কোম্পানিকে পিএমসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়,’ তিনি আরও যোগ করেন।

তিতাস পিএলসির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজও স্মার্ট প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের ধীরগতির কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি জানান, পিএমসি নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন যে তিতাস শীঘ্রই পরামর্শক নিয়োগ দিতে সক্ষম হবে।

সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের নভেম্বরে দুটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে তিতাস। ২৩ নভেম্বর, ‘গ্যাস সেক্টরে দক্ষতা ও কার্বন নিঃসরণ হ্রাস প্রকল্প’ এর আওতায় ১১ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে তিতাস। আর ২৮ নভেম্বর ‘স্মার্ট মিটারিং শক্তি দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্প’ এর আওতায় ৬.৫০ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে গ্যাস ট্রান্সমিশন ও বিতরণ কোম্পানিটি।

অতিরিক্ত সিস্টেম লস যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই সরকার তিতাস গ্যাসের জন্য এই স্মার্ট প্রিপেইড মিটার প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মধ্যে তিতাস প্রাচীনতম ও বৃহত্তম। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ৭ শতাংশ সিস্টেম লসের সঙ্গে লড়াই করছে।

তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা জানান, এই সিস্টেম লসের কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতি মাসে প্রায় ১৫০-১৮০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারা আরও জানান, যদি এই বিশাল সিস্টেম লস রোধ করা যায় তবে প্রতিষ্ঠানটি বছরে ১,৮০০-২,১৬০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবে।

উল্লেখ্য, জাপানিজ দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে তিতাস গ্যাস এ পর্যন্ত মূলত ঢাকা শহরে তার গৃহস্থালি গ্রাহকদের জন্য প্রায় ৩.৫ লাখ প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করেছে। এসব প্রিপেইড মিটার মূলত গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, পল্টন, রমনা, নিউমার্কেট, খিলগাঁও এবং সেগুনবাগিচা এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে।

বর্তমানে তিতাস গ্যাস প্রায় ২৮.৭৮ লাখেরও বেশি গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহ করে। যার মধ্যে প্রায় ২.৮৫৩ মিলিয়ন গৃহস্থালী গ্রাহক, ১২,০৭৮ জন বাণিজ্যিক গ্রাহক, ৫,৪২৯ জন শিল্প গ্রাহক, ১,৭৫৫ টি বন্দি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ৩৯৬ টি সিএনজি স্টেশন রয়েছে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, শুধুমাত্র তিতাস গ্যাসের বাজারের ৫৫% অংশ রয়েছে, অন্যদিকে অন্যান্য পাঁচটি কোম্পানির রয়েছে ৪৫%। তিতাস গ্যাসের বিশাল কর্ম এলাকার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী এবং ময়মনসিংহ।

প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক প্রায় ১৪,৪৫৯.৪১ মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস (২০২১-২৩ অর্থবছর) বিক্রি করে ২৬,৩৮৭.১২ কোটি টাকা আয় করে।

সূত্র: ইউএনবি

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.