তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল: ফখরুলের রিভিউ আবেদন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০১১ সালে বাতিল হওয়া নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মামলাটিতে প্রধান আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

গত ২৭ আগস্ট, বাদিউল আলম মজুমদার, 'সুশাসনের জন্য নাগরিক - সুজন' এর সম্পাদকসহ পাঁচজন নাগরিকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়েছিল।

এই আবেদনে ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করে সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, মো. জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং জাহরা রহমান।

আবেদনে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। ১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমুল্লাহ (বর্তমানে মৃত) এবং অন্যান্যরা এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ এবং সাংবিধানিক ঘোষণা করে।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিল বিভাগে আপিল করার অনুমতি পেয়ে ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা আপিল করেন।

আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ১০ মে এই আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে রায় ঘোষণা করে।

রায় ঘোষণার পর, ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে ১৫তম সংশোধনী আইন পাস করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তিসহ আরও কিছু ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়।

এই সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা পুনঃস্থাপন করা হয়। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে যোগ করা হয়।

এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

এছাড়াও, জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৪৫ থেকে ৫০-এ বৃদ্ধি করা হয়।

সংবিধানের ৭ নং অনুচ্ছেদের পর ৭ (ক) এবং ৭ (খ) - এই দুটি নতুন ধারা যোগ করা হয়, যার লক্ষ্য ছিল অসাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল বন্ধ করা।

বিরোধী দল বিএনপির বর্জনের মধ্যে ২৯১-১ ভোটে বিলটি পাস হয়।