ইরানের তেল স্থাপনায় হামলা না করার আশ্বাস দিলেন নেতানিয়াহু!

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছেন যে তার বাহিনী ইরানের সামরিক সাইটগুলোতে আক্রমণ করবে, পারমাণবিক কিংবা তেল স্থাপনায় নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানে হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেওয়ার পর তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ১৪ অক্টোবর, সোমবার ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

নেতানিয়াহু

ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই জন কর্মকর্তা বলেছেন, নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। সে সময় তিনি ইরানের সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করার আশ্বাস দিয়েছেন। 

দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান। এটির প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েল। 

প্রসঙ্গত, গত জুলাইয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন ইসমাইল হানিয়া। এরপর গত মাসে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন হাসান নাসরুল্লাহ। এই দুই জন নেতাই ইরানের দীর্ঘদিনের মিত্র ছিলেন।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এরপর থেকে তেহরান এবং তেল আবিবের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ইরান সেই হামলার জবাবে ইসরায়েলে শতাধিক ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

এদিকে ১ অক্টোবরে চালানো হামলার প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর নেতানিয়াহু। অথচ ৫ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাইডেন চাচ্ছেন না এই পরিস্থিতে এ ধরনের কোনো হামলার ঘটনা ঘটুক, যাতে নির্বাচনের ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়তে পারে। 

একজন কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার কারণে মার্কিন নির্বাচনে যেন প্রভাব না পড়ে তার জন্য সতর্ক রয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ইসরায়েল যদি ইরানের তেল স্থাপনায় হামলা করে তবে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে। ফলে এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য মার্কিন কর্মকর্তারা চাচ্ছেন, ৫ নভেম্বরের আগে যেন কোনো হামলার ঘটনা না ঘটে।  

তবে ইসরায়েল মার্কিন নির্বাচনের আগেই সম্ভবত ইরানে হামলা করবে বলে উল্লেখ করেছেন সেই কর্মকর্তা। কারণ এই পদক্ষেপ নিতে দেরী করলে ইরান সেটিকে ইসরায়েলের দুর্বলতার লক্ষণ হিসাবে দেখতে পারে। আর নেতানিয়াহু কোনোভাবেই এই দুর্বলতা প্রকাশ করতে চান না। তিনি বলেছেন, এটি প্রতিক্রিয়াগুলোর সিরিজের মধ্যে একটি হতে যাচ্ছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, গত সপ্তাহে বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার সময় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অনেক বেশি সংযত ছিলেন। এজন্য ইসরায়েলে থাড বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ প্রায় ১০০ সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।   

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি