ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’

যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘অংশীদার’ হিসেবে মূল্য দেয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে শীর্ষ অংশীদার এবং প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রধান উৎস হিসেবে দুই দেশের মধ্যে ‘দৃঢ় সহযোগিতা’ রয়েছে।

বৈঠকের ছবি

গত ১১ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি (উজরা জেয়া) এক্স'এ (পূর্বে টুইটার নামে পরিচিত) একটি সংক্ষিপ্ত বার্তায় এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ মানবিক সহযোগিতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং শ্রম অধিকারের প্রতি সমর্থন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।’

ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র সচিব এবং আন্ডার-সেক্রেটারি উজরা জেয়ার মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা, রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক প্রতিক্রিয়া ও টেকসই সমাধান এবং শ্রমিক অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গেও ‘ফলপ্রসূ বৈঠক’ করেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর ও সম্প্রসারিত করার এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে তারা অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তাদের আলোচনার মূল বিষয় ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগে মার্কিন কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা, রোহিঙ্গা ইস্যু ও শ্রম আইন সংস্কার।

পররাষ্ট্র সচিব মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জন ব্যাসের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন। বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার এবং অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রগুলিতে ফলপ্রসূ সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র সচিব মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী এবং দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ডিরেক্টর লিন্ডসে ডব্লিউ ফোর্ডের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন।

তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা, গণতান্ত্রিক রূপান্তর, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম আইন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গেও বৈঠক করেন। রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত তুলা থেকে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের জন্য ডিএফকিউএফ সুবিধা, ওষুধ পণ্যের নিবন্ধন সহজীকরণ এবং নিবন্ধন ফি হ্রাস, শ্রম আইন সংস্কার এবং মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ফিনান্স কর্পোরেশনের (ডিএফসি) সুবিধা গ্রহণের বিষয়ে তারা আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের একটি মধ্যাহ্নভোজ সভায় পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিস্তৃত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।

মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন সহকারী সচিব রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড লু, ভারপ্রাপ্ত সহকারী সচিব মার্টা সি ইয়ুথ, উপ-সহকারী সচিব নিকোল চুলিক, উপ-সহকারী সচিব মনিকা আগার জ্যাকবসেন এবং পরিচালক আল্লা পি কামিন্স।

ওয়াশিংটন সফরের আগে পররাষ্ট্র সচিব নিউইয়র্ক সফর করেন এবং ১৪ অক্টোবর তিনি ওয়াশিংটন ত্যাগ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।